May 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, January 2nd, 2024, 8:27 pm

মরতে বসেছে গাজার চিড়িয়াখানার ক্ষুধার্ত প্রাণীরা

অনলাইন ডেস্ক :

গাজায় মানুষের সঙ্গে মরতে বসেছে বোবা প্রাণীরাও। দক্ষিণের রাফাহ শহরে একটি চিড়িয়াখানায় ক্ষুধার্ত বানর, তোতা পাখি, সিংহসহ আরো অনেক প্রাণী খাবারের জন্য চিৎকার করছে। স্থানীয় একটি গোমা পরিবার চিড়িয়াখানাটির মালিক। প্রায় ১২ সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলের অভিযান চলছে গাজায়। আকাশপথ এবং স্থলভাগে চলছে ইসরায়েলি হামলা। অনবরত বোমাবর্ষণের আঘাতে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে। অনেক অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সবাই এখন দক্ষিণের রাফাহ শহরের দিকে ছুটছে। ফলে আশ্রয়কেন্দ্র, রাস্তা এবং খালি জায়গাগুলো মানুষে ভরে গেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেকে গাজার নানা প্রান্ত থেকে রাফাহর ওই চিড়িয়াখানায় আশ্রয় নিয়েছে। যারা আশ্রয় নিয়েছে তারা বর্ধিত গোমা পরিবারের সদস্য। চিড়িয়াখানায় পশুদের খাঁচার পাশে প্লাস্টিকের তাঁবু টানিয়ে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছে। তারা জানায়, অনেক পশু অনাহারে মরতে বসেছে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি খুবই দুর্বল এক বানরকে হাত দিয়ে টমেটোর টুকরা খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বানরটি নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। গাজা শহর থেকে পালিয়ে আসা আদেল গোমা বলেন, ‘অনেক পরিবার আছে যারা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এখন আমাদের সমস্ত পরিবার এই চিড়িয়াখানায় অবস্থান করছে। ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান আকাশ থেকে আমাদের দিকে যা ছুড়ে মারে তার চেয়ে এই প্রাণীদের মধ্যে বসবাস করা অনেক বেশি শান্তির।’

চিড়িয়াখানার মালিক আহমেদ গোমা বলেছেন, ‘চারটি বানর ইতোমধ্যে মারা গেছে এবং পঞ্চমটি এখন এতটাই দুর্বল যে খাবার পেলেও খেতে পারছে না।’ দুটি সিংহশাবকের জন্যও তিনি ভয়ে আছেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য পানিতে ভিজিয়ে শুকনা রুটি খাওয়াই। পরিস্থিতি সত্যিই দুঃখজনক।’ তিনি জানান, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে মা সিংহ তার অর্ধেক ওজন হারিয়ে ফেলেছে। আগে প্রতিদিন মুরগির মাংস দেওয়া হতো আর এখন সপ্তাহ ধরে অনাহারে থাকার পর শুধু শুকনা রুটি মেলে।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গাজা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং জনগণ খাদ্যসংকটের পর্যায়ে রয়েছে। যুদ্ধের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় সমস্ত খাদ্য, ওষুধ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমদানি বন্ধ করে দেয়। যদিও ইসরায়েল গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে, তবে নিরাপত্তার জন্য তল্লাশি, খাবার সরবরাহে বাধা এবং ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাজায় গাড়ি চলাচলে অসুবিধা, পরিস্থিতি ব্যাপক খারাপ করে তুলেছে। অনেক ফিলিস্তিনি এখন বলছে, তারা প্রতিদিন খাবার খেতে পায় না। চিড়িয়াখানায় কাজ করেন এমন একজন পশু চিকিৎসক সোফিয়ান আবদিন বলেছেন, ‘অনাহার, দুর্বলতা, রক্তাল্পতার কারণে প্রাণীরা প্রতিদিন মারা যাচ্ছে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এই সমস্যাগুলো ব্যাপক আকার ধারণ করছে। কারণ কোনো খাবার নেই।’ সূত্র: রয়টার্স