মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড় ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। জ্বালানি সংকট, গাছির অভাব ও নির্বিচারে গাছ নিধনই এর মূল কারণ বলে জানা গেছে।
এক বেসরকারি পরিসংখ্যানে জানা যায়, ৯০’র দশকে মাদারীপুর জেলায় সাড়ে ৮ লাখ খেজুর গাছ ছিলো। তখন মৌসুমে ৭ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হতো।
এসময় খেজুরের রস ও গুড় তৈরির সঙ্গে প্রায় ১০ হাজার পরিবার জড়িত ছিলো। এখানকার খেজুরের গুড় ঢাকা চট্রগ্রামসহ সুদূর কলকাতা পর্যন্ত রপ্তানি হতো।
কালের বিবর্তনে মাদারীপুরের ঐতিহ্য খেজুর গুড়ের সুনাম ও খ্যাতি আজ বিলুপ্তির পথে এসে দাঁড়িয়েছে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের লক্ষীগঞ্জ গ্রামের খেজুর গাছ কাটা গাছি জেলাল মৃধা (৪৫) ও হালিম মিয়ার (৬০) সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আগে জ্বালানি হিসেবে ধানের নাড়া জ্বালিয়ে রস থেকে গুড় তৈরি করা হতো। এখন নাড়া সংকটের কারণে রস থেকে গুড় বানানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, অভাবের কারণে অনেকে ইটভাটায় খেজুর গাছ বিক্রি করে দিচ্ছে। এছাড়া বর্ষা, বন্যা ও পোকার আক্রমনে প্রতিবছর অসংখ্য খেজুর গাছ মারা যাচ্ছে।
মাদারীপুর জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তর সূএ জানায়, জেলার চারটি উপজেলায় বর্তমান ৮১ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে।
সূএ আরও জানায়, অযত্ন অবহেলার কারণে খেজুর গাছের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে।
এদিকে খেজুর গাছের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার ফলে জেলার হাট-বাজারে খাঁটি রস ও গুড় পাওয়া যাচ্ছে না। জেলার সর্বত্র চিনি মিশ্রিত ভেজাল গুড়ে সয়লাব হয়ে গেছে। চিনিমিশ্রিত এক কেজি গুড় ২০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
একজন গুড় বিক্রেতা বলেন, এক কেজি খাঁটি গুড়ের দাম ৭০০ টাকা। অর্ডার দিলে সরবরাহ করা হয়।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, মাদারীপুর জেলার ব্রাডিং হচ্ছে খেজুর গুড়। তাই ঐতিহ্য আর সুনাম ফিরিয়ে আনার জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রতি উপজেলায় খেজুর চারা বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গাছিরা যাতে উৎসাহ পায়, সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি