November 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, December 8th, 2021, 7:56 pm

মাধ্যমিক স্কুলও বন্ধ হয়ে গেল আফগান মেয়েদের জন্য

অনলাইন ডেস্ক :

তালেবান সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে হতাশ শিক্ষার্থীরা । ক্ষমতা দখলের তিন মাসের মাথায় নতুন শিক্ষানীতি তৈরির অজুহাতে মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশুনা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান সরকার। তবে প্রাথমিক স্কুল খোলা থাকবে মেয়েদের জন্য। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির ভারপ্রাপ্ত উপ-শিক্ষামন্ত্রী আবদুল হাকিম হেমাত বলেছেন, নতুন শিক্ষানীতি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ থাকবে। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার এমন অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক পড়ুয়া আফগান মেয়েরা। দেশটির অন্তত ১৩টি প্রদেশের শিক্ষার্থী এবং প্রধানশিক্ষকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন হতাশার কথা তুলে ধরেছে বিবিসি। এই সিদ্ধান্ত মৃত্যুদন্ডের সমান বলে উল্লেখ করে ১৫ বছরের মীনা বলছে, স্কুলে পড়তে পারবে না জেনে সে এবং তার বন্ধুরা বিহ্বল হয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে তাদের স্কুলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১৬ বছরের লাইলা স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু তালেবানরা গত আগস্টে তাখার প্রদেশের তার স্কুল বন্ধ করে দেয়। এখন ঘরের কাজেই কাটছে তার পুরো সময়।কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকরা জানান, গত জুন মাস থেকে তারা বেতন পাচ্ছেন না। এছাড়াও স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মেয়েরাও হতাশায় ভুগছে এবং বাল্যবিবাহের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। তাদের মতে, মেয়েদের প্রাথমিক স্কুল চালু করা হলেও দরিদ্র্যতা এবং নিরাপত্তার ঝুঁকির কারণে তাদের পরিবার সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছে। এজন্য প্রাথমিক স্কুলেও মেয়েদের উপস্থিতির হার কমে গেছে। ক্ষমতা দখলের শুরুতে তালেবানরা নারীদের স্কুল যত দ্রুত সম্ভব চালু করার কথা বললেও সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। তবে কয়েকটা প্রদেশে স্থানীয় তালেবানদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে মেয়েদের কয়েকটা স্কুল খোলা হয়েছে। বালখ প্রদেশের উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার-ই-শরীফের একজন প্রধানশিক্ষক জানান, তার স্কুলে মেয়ে শিক্ষার্থী আসছে এবং পরিস্থিতিও স্বাভাবিক আছে। তবে একই শহরের একজন শিক্ষার্থী বিবিসিকে জানায়, বন্দুকধারী তালেবানরা স্কুলগামী মেয়েদেরকে মুখ এবং চোখ যাতে দেখা না যায়- তা নিশ্চিত করতে বলছে। এ কারণে তাদের স্কুলের এক তৃতীয়াংশ মেয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। উপ-শিক্ষামন্ত্রী আবদুল হাকিম হেমাত আরও জানান, তারা মেয়ে এবং ছেলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ আলাদা করার উপর জোর দিচ্ছেন। আর মেয়েদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে গিয়েই তাদের জন্য স্কুল চালু করতে দেরি হচ্ছে। যদিও গজনি প্রদেশের একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক বিবিসিকে জানান, স্কুল বন্ধের কারণে মেয়েদের জীবনে দীর্ঘমেয়াদি একটা প্রভাব পড়ছে। তার স্কুলের ১৫ বছর বা তার কম বয়সী অন্তত ৩ জন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। শিশুদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ আফগানিস্তানে বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এর আগে ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালেবান। তখনও মেয়ে এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশুনা নিষিদ্ধের পাশাপাশি নানান বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। এবারও নারীদের চাকরি নিষিদ্ধসহ পড়াশুনার সুযোগও সীমিত করেছে তারা।