অনলাইন ডেস্ক :
পুলিশি হেফাজতে ইরানি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যেসব বলা হচ্ছে তাকে গুজব, অপপ্রচার এবং বানোয়াট বলে মন্তব্য করেছেন তেহরানের পুলিশ প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসাইন রাহিমি। এসব গুজবে কান না দিতে তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। আমিনির পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাখ্যা দেন হোসাইন রাহিমি। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই ঘটনাটি পুলিশের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং আমরা সবসময় এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেই চেষ্টা করেছি। তেহরানের পুলিশ প্রধান বলেন, তেহরানে সামাজিক ও নৈতিক নিরাপত্তা টহল রয়েছে কয়েক বছর ধরে। এই টহলের উদ্দেশ্য হলো নৈতিক নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করা। আইন অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবেই নৈতিক নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বর্তায় পুলিশের ওপর। রাহিমি বলেন, নৈতিক নিরাপত্তা পুলিশ বাহিনী তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেয় এবং নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে। তাদের কাজের পদ্ধতি হলো নৈতিকতা পরিপন্থি কোনো ইস্যুতে প্রথমে তারা সতর্ক করে দেয়। মোটামুটি ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রেই তা করা হয় এবং সবাই তা মেনে নেয়। বাকি ১০ ভাগের মধ্যে ৯ ভাগকে পুলিশ ভ্যানে তুলে প্রয়োজনীয় সতর্কতা দেওয়া হয়। তারাও পুলিশের সতর্কতা আন্তরিকতার সাথে মেনে নেয়। বাকি এক শতাংশকে নৈতিক নিরাপত্তা পুলিশের সদর দফতরে নেয়া হয় যাদের পোশাক-আশাক রাস্তায় ঘুরে বেড়াবার মতো শালীন নয়। জনাব রাহিমি বলেন, নৈতিক নিরাপত্তা পুলিশের সদর দফতরে নেয়ার মানে গ্রেফতার করা নয়। বরং সেখানে উচ্চ শিক্ষিত ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা পুলিশ রয়েছে। তারা মূলত উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে। যাদেরকে সেখানে নেয়া হয় তাদের জন্য আধা ঘণ্টার একটা প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ওই কর্মশালার মাধ্যমে রাস্তায় চলাফেরা কীভাবে করতে হবে- সে সংক্রান্ত আইন-কানুন শিখিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ প্রধান আরও বলেন, মাহসা আমিনি এরকম এক মহিলা সহকর্মীর কাছে তার পোশাকের ত্রুটি কোথায় তা জানতে চায়। মহিলা পুলিশ তাকে বলেছিল মাহসার সালোয়ার এবং বোরকা- দুটোতেই সমস্যা ছিল। সেই মুহূর্তেই আমিনির অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে নার্স এবং পুলিশ মাহসা আমিনির সেবায় উপস্থিত হন এবং অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। রাহিমি বলেন, আমরা মাহসা আমিনিকে অবিলম্বে নিকটতম হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার চিকিৎসার ব্যাপারে কোনোরকম ত্রুটি হয় নি বলে তিনি জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মাহসা আমিনির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে যেসব বলা হচ্ছে তাকে তিনি গুজব, মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে মন্তব্য করেন। এসব গুজবে কান না দিতে তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে তিনি মাহসা আমিনি’র মেডিক্যাল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন জনাব রাহিমি। পার্সটুডে
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২