জেলা প্রতিনিধি, রংপুর (মিঠাপুকুর):
রংপুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের রূপসী ফতেপুর গ্রামে বুধবার (১২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই ঘরে থাকা আসবাবপত্র, নগদ টাকা, অটোভ্যানসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ ভ্যান চালক, কেউ দিন মজুর, কেউবা কৃষি শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের কেউ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রূপসী ফতেপুর গ্রামের ভ্যান চালক আবু আলীর বসতঘরে বুধবার রাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে মাহাবুল মিয়া, মোতালেব মিয়া, এরশাদ মিয়া, শাহিন মিয়া, শাহাদত মিয়া, হেলাল মিয়া, এনামুল হক, আজকার আলী, বুলু মিয়া, কলিম উদ্দিন ও মোকলেছ মিয়ার বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
খবর পেয়ে মিঠাপুকুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, ততক্ষণে আগুনে হাঁস-মুরগি, চাল-ডাল, পোশাক পরিচ্ছদ, আসবাবপত্র, ৩টি ব্যাটারী চালিত ভ্যান ও নগদ টাকাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন। সবকিছু হারিয়ে ১২টি পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ভ্যান চালক মোতালেব মিয়ার স্ত্রী লায়লা বেগম বলেন, আগুনে সউগ কিছু পুড়ি শ্যাষ হইল। হামরা এ্যালা (এখন) কোটে (কোথায়) যামো। কৃষি শ্রমিক শাহাদত মিয়া বলেন, কয়েকদিন পর ঈদ। এরমধ্যে আগুনে মূহুর্তেই সবকিছু শেষ হয়ে গেলো। আমরা কিভাবে বাঁচবো আল্লাহ্ ভালো জানেন। ভ্যান চালক আবু আলী বলেন, “খ্যায়া (খেয়ে) না খ্যায়া (খেয়ে) এতো কষ্ট করি কি করনো বাহে, সউগ (সব) শ্যাষ হয়্যা গেলো। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, “খোয়াড় ভর্তি হাঁস-মুরগি ছিল সউগ চলি গেলো। বউ-ছইল নিয়া খোলা আকাশের নিচে আছি”। স্থানীয় শাহ আলম ও আতোয়ার মিয়া বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রæত ঘটনাস্থলে আসতে পারলে হয়তো কয়েকটি ঘর রক্ষা করা সম্ভব হতো। তারা আসার আগেই সবকিছু পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বর্তমানে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি