April 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, October 24th, 2021, 1:18 pm

মিতু হত্যা: আদালতে ভোলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এহতেশামুল হক ভোলা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দিনের আদালতে ভোলার জবানবন্দি নেয়া হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) তাকে বেনাপোল বাজার এলাকার দুর্গাপুর রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআইয়ের চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।
জবানবন্দি শেষে ভোলাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো’র পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, যশোরের বেনাপোল থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ভোলাকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে। শনিবার বিকালে তাকে মিতু হত্যা মামলায় আদালতে তোলা হয়।

গত ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হলে আদালত নামঞ্জুর করেন। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসামি এহতেশামুল হক ভোলাকে চার সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিহত মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ভোলা। ২০১৬ সালের ২৭ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে ভোলাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ভোলার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার সহযোগী মনিরের হেফাজত থেকে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় মিতু হত্যা ও অস্ত্রের দুই মামলায় ভোলাকে আসামি করা হয়। ভোলা নগরীর বাকলিয়া থানাধীন রাজাখালী এলাকায় মৃত সিরাজুল হকের ছেলে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকাল ৭টা ১৭ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে। প্রথমে তারা তাকে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ওই সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

এ ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন বাবুল আক্তার। মামলাটি চট্টগ্রামের নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ৩ বছর ১১ মাস তদন্তে থাকার পর গত বছরের মে মাসে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপর মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এজাহারে সাবেক এসপি মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার, কিলিং স্কোয়াডের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম ওরফে কসাই কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যা ও শাহজাহান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। যদিও এর মধ্যে দুজন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইতোমধ্যে নিহত হারিয়েছেন এবং বর্তমানে জেলে আছে দুজন। পুলিশের মতে, নিখোঁজ রয়েছেন কিলিং স্কোয়াডের নেতৃত্ব দেয়া মুসা।

এছাড়া স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচদিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। ২৯ মে থেকে বাবুল আক্তার ফেনী কারাগারে আছেন।

—ইউএনবি