May 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, July 25th, 2022, 8:53 pm

মিয়ানমারে ৪ গণতন্ত্রপন্থীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

এপি, ব্যাংকক :

মিয়ানমারের জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) একজন এমপি ও তিনজন গণতন্ত্রকামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
সোমবার মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে প্রথমবার তারা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মিরর ডেইলি সংবাদপত্রে ফাঁসি কার্যকর করার কথা জানিয়েছে।
সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য আইন অনুসারে’ এই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে কখন ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে তা বলা হয়নি।
তবে কখন ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে তা বলা হয়নি।
সামরিক সরকার এই প্রতিবেদনের তথ্য নিশ্চিত করে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি জারি করেছে।
তবে ওই বন্দীদের যে কারাগারে রাখা হয়েছিল সেখানকার কারা বিভাগ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পরে মিয়ানমারের বাইরে গঠিত বেসামরিক সরকার তথা জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী অং মিয়ো মিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হচ্ছে জনগণকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।’
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন ফিও জেয়া থাও ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির দলের একজন এমপি; যিনি মং কিয়াও নামেও পরিচিত। গত জানুয়ারিতে একটি সামরিক আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে।
তার স্ত্রী থাজিন ন্যুন্ট অং এপিকে বলেন, তাকে জানানো হয়নি যে তার স্বামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি এখনও বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি।’
সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের জন্য ৫৩ বছর বয়সী গণতন্ত্র কর্মী কিয়াও মিন ইউকেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, যিনি কো জিমি নামে বেশি পরিচিত।
গত অক্টোবরে ইয়াঙ্গুনে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তিনি রাজনৈতিক সক্রিয়তার জন্য দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কিয়াও মিন ইউকে মাইন হামলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শহুরে গেরিলা আক্রমণ চালানোর জন্য ‘মুনলাইট অপারেশন’ নামে একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অন্য দুই মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত হ্লা মায়ো অং ও অং থুরা জাওকে ২০২১ সালের মার্চ মাসে একজন নারীকে (সামরিক বাহিনীর গুপ্তচর) নির্যাতন ও হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ভারপ্রাপ্ত এশিয়া ডিরেক্টর ইলেইন পিয়ারসন বলেছেন, চারজনের বিরুদ্ধে পরিচালিত আইনি প্রক্রিয়া ছিল ‘ঘোরতর অন্যায় ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সামরিক বিচার।’
মৃত্যুদণ্ডের ঘোষণার পর তিনি বলেন, ‘জান্তার লক্ষ্য অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদ আন্দোলনকে শান্ত করা।’
মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘ-নিযুক্ত একজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ থমাস অ্যান্ড্রুস মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সিদ্ধান্তের নিন্দা করেন এবং একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানান।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মিয়ানমারের দেশপ্রেমিক ও মুক্তিকামী মানুষের ফাঁসির খবরে আমি ক্ষুব্ধ ও বিধ্বস্ত।’
দেশটিতে ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীদের সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত করা হয়। তবে এরপরও কয়েক ডজন অভিযুকক্তের মৃত্যুদণ্ডের ঘোষণা দেয়া হয়।’
হত্যা ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে অনুসন্ধান করা দ্য অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস নামের একটি বেসরকারি সংস্থা শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানায়, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে দুই হাজার ১১৪জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এসময়ে আরও ১১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।