May 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, January 26th, 2023, 8:32 pm

মিশরে বই বিক্রি হচ্ছে কিস্তিতে

অনলাইন ডেস্ক :

মানুষ সাধারণত টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, গাড়ি, বাড়ির মতো দামি জিনিস কিস্তিতে কিনতে অভ্যস্ত। কিন্তু মিশরে এখন বইও বিক্রি হচ্ছে কিস্তিতে। সব কিছুর দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রকাশকরা। খবর বিবিসির। সেফসাফা প্রকাশনা হাউসের মোহাম্মদ এল-বালি বলেন, মিশরে বই এখন বিলাসবহুল পণ্যে পরিণত হয়েছে। এটি খাবারের মতো মৌলিক চাহিদার পণ্য নয় এবং মানুষ বিলাসী পণ্য কিনছে না। কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা থেকে কথাগুলো বলছিলেন তিনি। মেলাটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। গত বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই মেলায় গিয়েছিলেন। জানা গেছে, মিশরে বইয়ের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। সে কারণে অনেক লেখক তাদের লেখায় চরিত্র ও বিবরণ কাটছাঁট করছেন। এল-বালি জানান, দেশটিতে কাগজ ও কালির দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তাই তিনি বিদেশে বই ছাপানোর দিকে ঝুঁকেছেন এবং কম কপি তৈরি করছেন। কারণ তিনি মনে করেন, বইয়ের চাহিদাও ক্রমেই কমে যাবে। কায়রোর এ বইমেলা আরব বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ও বৃহত্তম। প্রকাশনা শিল্পের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। কিন্তু এ বছর মেলায় ক্রেতাদের আনাগোনা কম বলে মনে করা হচ্ছে। সে জন্যই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে কিস্তিতে বই কেনার সুযোগ রাখা হয়েছে। মিশরের পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ক্রেতারা দেড় শতাংশ সুদে নয় মাসের কিস্তিতে বই কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। জনপ্রিয় কথাসাহিত্য লেখক দিনা আফিফি আশা করছেন, পাবলিশার্সদের এই পদক্ষেপ বই বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করবে। তিনি জানিয়েছেন, মুদ্রণ খরচ কমাতে তার সবশেষ বইয়ের আকার পরিবর্তন করা হয়েছিল। দিনা বলেন, ক্রমবর্ধমান মুদ্রণ ব্যয়ের কারণে আমার বইয়ের আকার ছোট করা হয়েছে। প্রায় ১০০ পৃষ্ঠা থেকে মাত্র ৬০ পৃষ্ঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। মিশরীয় অনেক ঔপন্যাসিকই তাদের বই ছোট করার জন্য লেখায় কাটছাঁট করছেন। গল্পের ধারা বর্ণনা সহজ করে, ছোট ছোট চরিত্রগুলোকে কম উপস্থাপন করে এবং বর্ণনা কমিয়ে লেখা ছোট করা হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, মিশরের অনেক পাঠক এখন বইয়ের নিম্নমানের নকল কপি কিনছেন। এগুলো রাস্তায় ৫০ থেকে ১০০ মিশরীয় পাউন্ডে পাওয়া যায়। একজন মিশরীয় কবি বলেছেন, সাধারণ মানুষ বই কেনার চেয়ে টেবিলে খাবার রাখাটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সম্প্রতি ব্যাপক মূল্যস্ফীতির কারণে মিশরীয়দের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। ব্যাপকভাবে আমদানির ওপর নির্ভরশীল দেশটি বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে পড়েছে। ক্রমাগত মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে মিশরীয় পাউন্ডের মূল্য গত এক বছরে অর্ধেকে নেমে এসেছে। সরকার বলেছে, তারা দাম কমানোর জন্য সাধ্যমতো সব কিছুই করছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার জন্য ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত নানা কারণকে দায়ী করেছে তারা।