রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই প্রত্যাবাসন হওয়া উচিত। এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। দক্ষিণ কোরিয়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।’
রাষ্ট্রদূত লি বলেন, ইস্যুটি শুধু মানবিক নয়, মানবাধিকারও বটে।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) কর্তৃক আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন বক্তব্য দেন।
রাষ্ট্রদূত লি বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে। তিনি বলেন, ‘আগামী বছরকে আমাদের সম্পর্কের ভবিষ্যতের জন্য একটি অর্থবহ বছর করার লক্ষ্যে আমি বিভিন্ন পরিকল্পনা ও চেষ্টা করছি। ৫০ বছরের বন্ধুত্ব নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হচ্ছে তাঁর অন্যতম একটি প্রস্তুতি।’
তিনি বলেন, এই উদযাপন ও প্রচেষ্টায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২১ সালে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার অতিক্রম করে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। তাঁর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে ২০২১ সালে রপ্তানি করেছে ১৬৩ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ছে। অপরদিকে ২০২১ বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় ৫৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রপ্তানি করেছে, যা গতবছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ছে।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত অর্থবহ উন্নয়ন। কারণ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থবির হয়েছিল। ২০১১ সালে এটি ১৮০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল।’ তিনি আরও যোগ করেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের পঞ্চম বড় বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশ।
এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট বিদেশি বিনিয়োগের মধ্যে ১৫ কোটি ডলার নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া প্রথম অবস্থানে আছে। যা প্রমাণ করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘আমি নিশ্চিত যে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করতে মিডিয়া ও সাংবাদিকরাও ভূমিকা রেখেছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও গভীর করাই আমার দায়িত্ব। বাংলাদেশে আমার দায়িত্বের শুরুতে এ বিষয়ে বলেছি, এখানে আমি আমার মেয়াদে কাজের তিনটি প্রধান উদ্দেশ উপস্থাপন করেছি। যেগুলো হল-বৈচিত্র্যতা, উচ্চতা ও প্রজন্ম।’
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র