November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, January 29th, 2022, 9:43 pm

মিয়ানমারে সেনা অভুত্থানের ১ বছর: সেনাবাহিনীর ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘের

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের সাধারণ জনগণের ওপর সহিংসতা বন্ধ এবং দ্রুত বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর ওপর চাপ প্রয়োগ জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলেট এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সেনা অভ্যুত্থানের এক বছরে মিয়ানমারের জনগণকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। তাদের জীবনযাপন ও স্বাধীনতার ওপর প্রভাব পড়েছে। তিনি মনে করেন সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

মিয়ানমারে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে জান্তা বাহিনী। সেদিনই গ্রেপ্তার করা হয় অং সান সু চিসহ ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে।

দিনটিকে সামনে রেখে শুক্রবার মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট।

তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ২০২২ সালের মার্চ মাসে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির বিশদ বিবরণ দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক এ হাইকমিশনার আরও বলেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ও নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু করার এখনই সময়। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ব্যাশেলেট বলেন, তিনি মিয়ানমারে সাংবাদিকদের ওপর চালানো নির্যাতনের হিমশীতল বিবরণ শুনেছেন; কারখানার শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখা হচ্ছে এবং শোষণ করা হচ্ছে; রোহিঙ্গাসহ জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর তীব্র নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্বিচারে আটক ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মিথ্যা বিচার করা হচ্ছে; গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান হামলা এবং ভারী অস্ত্রের ব্যবহারসহ নির্বিচারে আক্রমণ চালানো হচ্ছে- যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, তবুও সাহসী কিছু মানবাধিকারকর্মী ও ট্রেড ইউনিয়নের কর্মীরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংগ্রহ এবং আমাদের কাছে পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

ভিন্নমতকে দমন করার জন্য ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক বাহিনীর নির্যাতনে কমপক্ষে এক হাজার ৫০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এর থেকেও অনেক বেশি।

সেনাবাহিনীর বিরোধিতার জন্য কমপক্ষে ১১ হাজার ৭৭৮ জনকে নির্বিচার আটক করা হয়েছে। নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছেন আট হাজার ৭৯২ জন।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় আরও বলেছে, বন্দি অবস্থায় অন্তত ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

—ইউএনবি