অনলাইন ডেস্ক :
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী এবং জাতিভিত্তিক বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের মুখে শত শত শিশুসহ আড়াই হাজারের বেশি মানুষ পালিয়ে থাইল্যান্ড সীমান্তের মায়ে সোত শহরে আশ্রয় নিয়েছে। থাই সরকার এবং একটি ত্রাণ সংগঠনের বরাতে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এদিকে, এক সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশের উপ গভর্নর জানিয়েছেন, কয়েকদিনে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ের পর এই বিপুল সংখ্যক মানুষ পালিয়ে এসেছে। এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ-আন্দোলনে অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছাড়াও পল্লী অঞ্চলগুলোতে মাঝেমধ্যেই জান্তাবিরোধী মিলিশিয়া এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে। কারেন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মতো এমন আরও জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের সঙ্গেও সময় সময় সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াই হচ্ছে। তাক প্রদেশের উপ গভর্নর সোমচাই বলেন, সীমান্তের থাইল্যান্ড অংশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ২,৫০৩ জন। আর এদের মধ্যে ৫৪৫ জনই শিশু বলে জানিয়েছেন থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের শরণার্থী অধিকার সংগঠন এইড অ্যালায়েন্স কমিটির কর্মকর্তা ইয়ে মিন। তিনি বলেন, তাদেরকে খাবার দেওয়া হচ্ছে, থাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ চলছে। মিন জানান, বাস্তুচ্যুত এই মানুষদের বেশিরভাগই এসেছে মিয়ানমারের কারেন রাজ্যের লে কে ক এবং এর আশেপাশের গ্রামগুলো থেকে। ওই অঞ্চলে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় আছে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ)। স্যোশাল মিডিয়ায় এক পোস্টে এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি বুধবারের লড়াইয়ে মিয়ানমারের চার সেনা নিহত এবং আরও ৪ সেনা আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে। তাছাড়া, মিানমারের জান্তাবিরোধী সমান্তরাল সরকার সমর্থিত পাবলিক ভয়েস টিভি তাদের খবরে কয়েকটি ছবি দেখিয়ে বলেছে, মিয়ানমারের সেনাদের অস্ত্রশস্ত্র দখল করাসহ নিরাপত্তা বাহিনীর আট সদস্যকে আটক করা হয়েছে। ১৮ জন সরকারি সেনা লড়াইয়ে মারা পড়েছে বলেও দাবি করা হয় খবরে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর নিরপেক্ষ সূত্রে যাচাই করতে পারেনি। মিয়ানমারের সামরিক জান্তাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। অন্যদিকে, তাক প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থাই সীমান্ত থেকে ৫০০ মিটার দূরে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। লড়াই চলাকালে সীমান্তের থাই অংশে গোলাও পড়েছে। তবে এতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। থাই বাহিনী ওই এলাকায় টহল জোরদার করেছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২