৩০ হাজার টাকার জন্য ভারতের অপরাধ বিষয়ক টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ এর কায়দায় স্কুলছাত্র নীরব মণ্ডলকে (১৩) অপহরণ করে তারা। অজ্ঞান করার লক্ষ্যে গলায় রশি পেঁচালে শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়। এরপর তার লাশ স্কুলের একটি কক্ষে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় আটক পাঁচ কিশোর এই স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
খুলনায় বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে স্কুলের একটি কক্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নীরবের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একই স্কুলের ওই পাঁচ ছাত্রকে আটক করে।
পুলিশ জানায়, আটকরা স্বীকার করেছে যে তারা মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা পেতে ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে এই অপহরণের পরিকল্পনা করে।
নিহত নীরব খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া পূর্বপাড়া এলাকার পান-সুপারি ব্যবসায়ী শেখর মণ্ডলের ছেলে।
আটকরা হচ্ছে- গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র সোহেল মোল্লা (১৫), হীরক রায় (১৫) ও পিতু মণ্ডল (১৪), দশম শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায় (১৫) ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মণ্ডল (১৩)।
এর মধ্যে পিয়ালের বাড়ি ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া তেলিগাতি এলাকায় এবং অন্য চারজনের বাড়ি গুটুদিয়া এলাকায়।
ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া বলেন, নীরব মণ্ডল গুটুদিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) স্কুল ছুটির পর পিয়াল নামে একটি ছেলে নীরবকে ডেকে নিয়ে যায়। স্কুলের পেছনে পরিত্যক্ত একটি ভবনের মধ্যে অবস্থান করছিল পিতু, সোহেল এবং দ্বীপ। নীরবকে সেখানে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা তার পা ধরে মুখ বন্ধ করতে চায়।
এছাড়া রশি ঝুলিয়ে রেখেছিল দ্বীপ। আটকদের ভাষ্য অনুযায়ী-তাদের পরিকল্পনা ছিল অজ্ঞান করে তার বাবার কাছ থেকে টাকা নেয়ার। কিন্তু তারা প্রথমেই তাকে ঝুলিয়ে মেরে ফেলে।
দুই থেকে তিনজন রশি টেনে ধরে রাখে, নীরব সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, সেখানে নীরবের লাশ রেখে তারা তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। হীরকের দায়িত্ব ছিল নীরবের বাবার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা। ওই নম্বরে ফোন দিয়ে নীরবের বাবার কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
ওসি বলেন, বিষয়টি জানার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে আটক করি। লাশ উদ্ধারের আগে প্রথমে সোহেলকে আটক করি। পরে দ্বীপ, পিয়াল ও পিতুকে আটক করা হয়। আর লাশ উদ্ধারের পর হীরককে আটক করা হয়।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ
সাইবার আইনের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে, গ্রেপ্তাররা মুক্তি পাচ্ছেন
সাবেক এমপি সুজনের জামিন না মঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ