April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 8th, 2021, 9:40 pm

মুনিয়ার মৃত্যু: চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানি ১৭ অগাস্ট

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনার’ মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পুলিশ দাখিল করেছে, তা গ্রহণের বিষয়ে শুনানি হবে আগামী ১৭ অগাস্ট। মুনিয়ার বোন মামলার বাদী নুসরাত জাহান তানিয়া সেদিনই ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর তার না-রাজি (অনাস্থা) আবেদন আদালতে দাখিল করতে পারবেন। পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদন এখনই গ্রহণ না করে না-রাজি আবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে একটি আবেদন করেছিলেন তানিয়ার আইনজীবীরা। রোববার (৮ আগষ্ট) সেই আবেদনের শুনানি করেই আদালত এ তারিখ ঠিক করে দেয়। বাদীর অন্যতম আইনজীবী ব্যরিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, কোভিড আর লকডাউনের কারণে মুনিয়ার বোন আদালতে আসতে পারেননি। তাছাড়া মামলার সত্যায়তি কপিও এখনো সরবরাহ করা হয়নি। সে কারণে আমরা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে না-রাজি আবেদনটি জমার জন্য যেন সময় দেওয়া হয়, সেই দরখাস্ত দেই। শেষ পর্যন্ত আমরা সেই দরখাস্তের শুনানি করতে পেরেছি। শুনানি করেছেন আমাদের আইনজীবী দলের সদস্য মাসুদ সালাউদ্দিন। পরে আদালত পুলিশের নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মো. আলমগীর আদালতপাড়ার সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৭ অগাস্ট চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের শুনানির জন্য দিন রাখা হয়েছে। সেদিন বাদী ইচ্ছে করলে না-রাজি আবেদন দাখিল করতে পারবেন। আইনজীবী সরোয়ার হোসেন জানান, গত ২৯ জুলাই মামলার ধার্য তারিখেই মামলার বাদি না-রাজি আবেদন জমা দিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনে আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তা জমা নেওয়া হয়নি। আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৯ জুলাই আদালতে ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ দাখিল করেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সে সময় বলেছিলেন, মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। সেখানে বলা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে। অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কখনো কথা বলেননি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। এপ্রিলের শেষ দিকে তার আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টে একটি আবেদন করা হলেও মহামারীর মধ্যে লকডাউনে সে আবেদনের শুনানি তখন আর হয়নি। ওই প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তির কারণ ব্যাখ্যা করে বাদীর আইনজীবী বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের শুধুমাত্র ৯(১) ধারার ধর্ষণ নয়, ধর্ষণের ফলে উদ্ভূত বিষয় ৯(২) ধারায় সঙ্গে আসবে। আসবে দ-বিধির ৩০২ ধারাও। ধর্ষণজনিত কারণে আত্মহত্যা এখানে আসে। মুনিয়া ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার মনোহরপুরে; পরিবার সেখানেই থাকেন। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি। মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে তার মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের আলামত উদ্ধার করে পুলিশ, যার মধ্যে ছয়টি ডায়েরি ছিল। সিসিটিভির ভিডিও পরীক্ষা করে মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথাও সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, তদন্ত কতৃপর্ক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে তার বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি। অটোপসি রিপোর্ট দেখেননি অথবা গুরুত্ব দেননি। তদন্তে কী পাওয়া গেল তা নিয়ে বাদীর সঙ্গে আলাপ আলোচনাও করেননি। আমরা ২৯ জুলাই দুটো আবেদন নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত সেগুলো গ্রহণ না করে আমাদের ফিরিয়ে দিয়ে বলেছে, আদালত খুললে তা নেওয়া হবে।