অনলাইন ডেস্ক :
বহুল আলোচিত রাজধানীর গুলশানে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে (২১) ‘ধর্ষণের পর হত্যা’ মামলায় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুইদিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে গুলশান থানায় গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের হয়। পরে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (২) (ধর্ষণ) ও দ-বিধির ৩০২ ধারায় (হত্যা) এ মামলার প্রধান আসামি নিহত মুনিয়ার ‘কথিত প্রেমিক’ সায়েম সোবহান আনভীর। এ ছাড়া তার বাবা, মা ও স্ত্রীসহ মোট আটজনের নাম আসামির তালিকায় রয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এর বিচারক মামলাটি গ্রহণ করেন। মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়ার করা এ নালিশি মামলার এজাহারে চাঞ্চল্যকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়। ডাক্তারি পরীক্ষার বরাত দিয়ে এজাহারে বলা হয়, মৃত্যুর আগেও মুনিয়া ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভোরে যশোরে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন, মুনিয়া দু-তিন সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাও ছিলেন, তার পরনের জামা-কাপড় ছেঁড়া ছিল ও পুরুষের ডিএনএ মিলেছে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে এই কলেজছাত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, ছয় নম্বর আসামি সাইফা রহমান মিম এক নম্বর আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের গার্লফ্রেন্ড ও সাত নম্বর আসামি কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার সঙ্গেও ওই আসামির বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। পিয়াসা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ভিকটিম মুনিয়াকে বিভিন্ন সময় ফোন করে আনভীরের সঙ্গ ত্যাগ করতে বলে এবং তার মাধ্যমেই দুই নম্বর আসামি আনভীরের মায়ের কাছে ভিকটিম সম্পর্কে কুৎসা রটিয়ে হত্যার প্ররোচনা দেয়। পিয়াসার মাধ্যমেই মুনিয়াকে বাসায় ডেকে নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতে বাধ্য করে প্রধান আসামির পরিবার। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ আদালতে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম মাফরোজা পারভীন মামলাটি গুলশান থানাকে এজাহার হিসাবে গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম