জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা (মুরাদনগর) :
মুরাদনগর উপজেলার ভিটিপাচঁপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠকে পুকুরে পরিনত করে মাটি কেটে নিয়ে গেছে ঠিকাদার। ফলে গর্তে পরে যাওয়ার আতঙ্কে আছে ওই বিদ্যালয়ের ২০৭ জন কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে আসলেও খেলাধুলা করতে মাঠে নামতে পারছেনা কেউ। তবে ৮ মাস আগে নবনির্মিত ভবনের অজুহাতে মাঠের মাটি কেটে নিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অলৌকিক কারণে লিখিত অভিযোগ দেয়নি কেউ। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় অভিভাবকের মাঝে।
ভিটিপাঁচপুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কামরুন্নাহার বলেন, ২০২০ সালে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়। গত ৮ মাস আগে সেই ভবনে মাটি লাগবে এমন অজুহাতে করোনা কালীন সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকা অবস্থায় মাঠের মাটি কেটে নিয়ে যায় ঠিকাদার। বিদ্যালয় খোলার পর বিষয়টি রেজুলেশন আকারে আনা হয়েছে। তখন ঠিকাদার বলেছিলেন বিদ্যালয় খোলা মাত্রই তিনি মাটি ভরাট করে দিবেন। কিন্তু বিদ্যালয় খোলার দীর্ঘ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত গর্তটি ভরাট করেনি সে। এ বিষয়ে আমি আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কে জানিয়েছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাব-কন্ট্রাক্টর মিজান এর কাছে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন, এটি এমন কোন গর্ত নয়। প্রয়োজনে মাটি কেটে নিয়েছিলাম কিছুদিনের মধ্যেই আবার ভরাট করে দিব। গর্তের ফলে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা হলে এর দায়ভার কে নিবে? জানতে চাইলে তিনি আরোও বলেন, আমার সাথে আপনি দেখা করিয়েন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারের যোগসাজশেই এটি হয়েছে। স্কুলটির একমাত্র খেলার মাঠটি ৬ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে গেল ঠিকাদার অথচ এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলো না। এই গর্তের ফলে এখন অভিভাবকরা বাচ্চাদেরকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে। পাশাপাশি বিদ্যালয় এর আশপাশের বাড়িঘরের মানুষেরাও তাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের কে নিয়ে সব সময় একটা আতঙ্কে থাকতে হয়। এই গর্ত দ্রুত ভরাট না করলে যেকোনো সময়ে এখানে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা তখন এর দায়ভার কে নিবেন।
মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর কবির বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার সাথে কয়েকবার মৌখিক আলোচনা হয়েছে তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত ভাবে জানায়নি। ঠিকাদারের সাথে কথা বলে খুব দ্রুতই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফওজিয়া আক্তার বলেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আমাকে জানানোর পর আমি যতবার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের সাথে কথা বলেছি তারা ততবারই খুব দ্রুত ভরাট করে দেবে বলেছেন। পরে বিষয়টি মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হলে ভরাট করে দেয়ার বিষয়ে একইভাবে আশ্বস্ত করেন উপজেলা প্রকৌশলী। যেহেতু মৌখিকভাবে সহযোগিতা চেয়েও কোনো ভালো ফলাফল পাইনি। খুব দ্রুতই এ বিষয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি