নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুরাদ হাসানের লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র ও তার স্ত্রীর লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র নিরাপত্তাজনিত কারণে জমা নিয়েছে ডিএমপির ধানমন্ডি থানা পুলিশ। রোববার (৯ জানুয়ারী) ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডা. মুরাদের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে একটি জিডি করেছেন, তাই তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ডা. মুরাদের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্রগুলো থানায় জমা দিতে বলি। থানার নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি গত শনিবার এসে দুটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া ডা. মুরাদের স্ত্রীকেও তার লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা বললে তিনিও গত শনিবার অস্ত্র জমা দিয়ে গেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনে তিনটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন, যার মধ্যে একটি পিস্তল ও দুইটি শটগান। ওসি বলেন, জিডিতে নিরাপত্তাজনিত বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তাই আমরা অস্ত্রগুলো জমা নিয়েছি। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের অস্ত্রগুলো থানায় জমা থাকবে। এদিকে বৃহস্পতিবার সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি ১৯ বছর। বিবাহিত জীবনে আমাদের সংসারে এক মেয়ে রামিসা ফারিহা রাজকন্যা (১৬) এবং এক ছেলে হাসান আবরার মাহির যুবরাজ (১১)। বিবাদী আমার স্বামী। তিনি বর্তমান সরকারের সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কারণে-অকারণে আমাকে ও সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন। ৬ জানুয়ারি, সময় অনুমান ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে আগের মতো আমাকে ও আমার সন্তানদের গালিগালাজ করে এবং মারধর করার জন্য উদ্যত হলে আমি ৯৯৯-এ কল করি। পরে ধানমন্ডি থানা পুলিশ বাসার ঠিকানায় পৌঁছালে বিবাদী বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিবাদী আমাকে এবং আমার সন্তানদের যে কোনো সময় ক্ষতি করতে পারে। এর আগে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চান ডা. জাহানারা এহসান। পরে তিনি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করার জন্য থানায় যান। এদিকে ডা. জাহানারা এহসানের করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (৯ জানুয়ারী) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার (নন-জিআরও) কর্মকর্তা ফুয়াদ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। উল্লেখ্য, এক নারীর সঙ্গে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ও বিতর্কিত কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার দেওয়া অসৌজন্যমূলক বক্তব্য মুহূর্তের মধ্যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি নিয়ে সর্বমহলে সমালোচনা শুরু হলে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। আলোচনা-সমালোচনার একপর্যায়ে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন ডা. মুরাদ হাসান। পদত্যাগের পর তিনি কানাডায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে সেখান থেকে দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয় তাকে। দুবাইয়ে ঢুকতে না পেরে অবশেষে দেশে ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম