November 15, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, October 11th, 2021, 9:17 pm

মুসা বিন শমসেরকে ডিবি কার্যালয়ে তলব

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার আবদুল কাদেরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ধনকুবের মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এজন্য মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) তাকে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। ডিবি সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে মধ্যাহ্নভোজের পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে। এ সময় কাদেরের সঙ্গে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে মুসা বিন শমসেরকে। মুসা বিন শমসেরের আইন উপদেষ্টা ছিলেন প্রতারক আবদুল কাদের। সূত্র আরও জানায়, মুসার বয়স বর্তমানে ৭৭ বছর। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া তিনি করোনার টিকা নেননি। অসুস্থতার কারণে তাকে সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করা হয়নি। তাকে মঙ্গলবার দুপুরের পরে কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে। আসা, না আসার বিষয়ে তিনি কোনো নিশ্চয়তা দেননি। ডিবি ধারণা করছে, প্রতারণার মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি হাজির হবেন। এ বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, গত রোববার তার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার মুসাকে ডাকা হয়েছে। তাকে প্রতারকের বিষয়ে কিছু প্রশ্নোত্তর করা হবে। এর আগে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে গ্রেপ্তার আবদুল কাদেরের প্রতিষ্ঠানে শমসেরের একাধিক ছবি টাঙানো রয়েছে। তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন শমসেরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাডভাইজার হিসেবে। প্রতারক আবদুল কাদেরের কাছ থেকে মুসা বিন শমসের ও তার স্ত্রীর সঙ্গে করা কিছু চুক্তিপত্র উদ্ধার করা হয়। এসব বিষয় জানতেই মূলত শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ডিসি মশিউর রহমান বলেন, আবদুল কাদের চৌধুরীর আসল নাম, আবদুল কাদের মাঝি। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেণি। কিন্তু তিনি প্রতারণামূলকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে, নিজেকে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পরিচয় দিতেন। নিজের এক কোটি ২০ লাখ টাকার প্রাডো গাড়িতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগিয়ে ঢুকতেন সচিবালয়ে। ডিবি জানায়, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এভাবে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আবদুল কাদের। নানা অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ অক্টোবর মিরপুর ৬ নম্বরে বাসা থেকে বাইরে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হন তিনি। একই সঙ্গে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- সততা প্রপার্টিজের চেয়ারপারসন ও আবদুল কাদেরের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী ছোঁয়া, অফিস ম্যানেজার শহিদুল আলম ও অফিস সহায়ক আনিসুর রহমান। ডিবিপ্রধান বলেন, আবদুল কাদেরের আদি বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ভূমিহীন এক কৃষক পরিবারে। তার বাবা জীবিকার সন্ধানে সন্দ্বীপে পাড়ি জমিয়েছিলেন। মাছ ধরে ও মাঝির কাজ করে জীবিকা উপার্জন করতেন। এমন ভূমিহীন ভাসমান আবদুল কাদেরের ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। এর মধ্যে গুলশান-১ নম্বরের জব্বার টাওয়ারের প্রায় ৬ হাজার স্কয়ার ফুট আয়তনের অফিস রয়েছে। কারওয়ান বাজারেও রয়েছে আরও একটি অফিস। মিরপুর-৬ নম্বরে বসবাস করলেও একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। ডিবিপ্রধান আরও জানান, আবদুল কাদের নয়তলা বাড়ি কিনেছেন গাজীপুরের বোর্ডবাজারে। গাজীপুরের পুবাইলে রয়েছে ৮ বিঘার বাগানবাড়ি। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকে রয়েছে তার একাধিক অ্যাকাউন্ট। যেখানে রয়েছে লাখ লাখ টাকা। অঢেল সম্পদের মালিক এ কাদেরের নেই কোনো বৈধ উপার্জন। প্রতারণা ও মিথ্যা তার একমাত্র পুঁজি বলে মন্তব্য করেন ডিবিপ্রধান। আব্দুল কাদের, তার স্ত্রী ও তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় অস্ত্র মামলা, তেজগাঁও থানায় প্রতারণার মামলা রয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে পাসপোর্ট জালিয়াতি, বিভিন্ন প্রতারণা, ব্যাংকে নিয়োগ বিষয়ে কমপক্ষে অর্ধ ডজন মামলাও রয়েছে বলে জানায় ডিবি।