জেলা প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) জানিয়েছে, মুহিবুল্লাহকে হত্যা করতে ‘কিলিং স্কোয়াডে’ ছিল পাঁচ অস্ত্রধারী। মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে তারা মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে। আর এ হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল মোট ১৯ জন। শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে উখিয়ায় মুহিবুল্লাহর হত্যার কিলিং স্কোয়াডের সদস্য আজিজুল হককে গ্রেফতারের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক। এপিবিএন জানিয়েছে, আজিজুল হক ছাড়াও কুতুপালং ক্যাম্প-১-এর ডি ৮ ব্লকের আবদুল মাবুদের ছেলে মোহাম্মদ রশিদ প্রকাশ মুরশিদ আমিন ও একই ক্যাম্পের বি ব্লকের ফজল হকের ছেলে মোহাম্মদ আনাছ ও নুর ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসপি নাঈমুল হক বলেন, মুহিবুল্লাহ কিলিং মিশনে সরাসারি অংশ নেওয়া আজিজুল হক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেনÑ মুহিবুল্লার হত্যার দুই দিন আগে লাম্বাশিয়া মরকজ পাহাড়ে কিলিং মিশনের জন্য একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে জানানো হয়, তথাকথিত দুর্বৃত্তদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মহিবুল্লাহকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে। ওই বৈঠকেই কিলিং মিশন শেষ করার জন্য মোট ১৯ জনের একটি দল গঠন করে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে পাঁচ জনকে অস্ত্র নিয়ে সরাসরি মুহিবুল্লাহর ওপর হামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেওয়া আজিজুল ছাড়াও বাকি চার জন ওই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের এই কর্মকর্তা ব্রিফিংয়ে বলেন, অস্ত্রধারীদের প্রথম জন মুহিবুল্লাহকে একটি গুলি করে। পরের জন আরও দুইটি গুলি করে। সব মিলিয়ে চারটি গুলি করা করা মুহিবুল্লাহকে। গুলি চালানো শেষ হলে কিলিং স্কোয়াডের এই পাঁচ জন মুহিবুল্লার বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যায়। নাঈমুল হক বলেন, এরপর সবাই সতর্ক হয়ে গেলে মুহিবুল্লাহ হত্যা নিয়ে নিজেরাই বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিতে থাকে। বিভিন্ন পক্ষের ওপর তারা দোষ চাপাতে থাকে, যেন নিজেদের ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে রাখা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এপিবিএন বলছে, মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন। এতে তিনি রোহিঙ্গাদের বড় নেতা হয়ে উঠছিলেন বলে মনে করছেন এই হত্যার মাস্টারমাইন্ডরা। আর সে কারণেই তারা মুহিবুল্লাহকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এসপি নাইমুল হক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক জানিয়েছে, মুহিব্বুল্লাহ হত্যাকান্ডে বিভিন্ন পর্যায়ে মোট ১৯ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী অংশ নেয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট-ওয়েস্ট (ডি ব্লকে) নিজ অফিসে অবস্থান করছিলেন মুহিবুল্লাহ। এ সময় বন্দুকধারীরা গুলি করে হত্যা করে তাকে। এখন পর্যন্ত এ হত্যা মামলায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে মোহাম্মদ ইলিয়াছ নামে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি