অনলাইন ডেস্ক :
লাগাতার রুশ হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিউপোল। রাশিয়ার আগ্রাসনে সবথেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে এই শহরটিতে। যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মরদেহ। প্রাণ বাঁচাতে যে যেভাবে পারছেন বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন। সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, টানা গোলাবর্ষণ করে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে শতশত বসতবাড়ি। সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, পুরো নগরীর যেদিকে চোখ যায় শুধু সারি সারি মরদেহ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব মরদেহের সন্ধানেও আসছে না কেউ। যারা বেঁচে আছেন প্রাণভয়ে ছুঁটছেন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। মারিউপোলের বাসিন্দারা বলছেন, গোলার আঘাতে বিধ্বস্ত নগরীর মাইলের পর মাইল এলাকা। রুশ হামলার পর ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহাল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার বলেন, এ শহরের আর কোনো অস্তিত্ব নেই। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুলেবা বলেন, মারিওপোলের আর কোনো অস্তিত্ব নেই। অল্প কিছু বাহিনী ও সাধারণ বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এখনো বেঁচে আছে। তবে তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ বাহিনী। তারা প্রতিদিন বাঁচার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। তবে রাশিয়ার আচরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে, যে কোনো মূল্যে ওরা শহরটাকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে চায়। এদিকে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান ৫৫তম দিনে গত সোমবার রাতে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে রুশ বাহিনী বোমাবর্ষণ করেছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় লাভিভ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া খারকিভ শহরে আবাসিক ভবনের ওপর রুশ বাহিনী গোলাবর্ষণ করলে অন্তত দুইজন বেসামরিক লোক নিহত হয়। রাজধানী কিয়েভেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কিয়েভ দখলের চেষ্টা করলে প্রতিরোধের মুখে পিছু হটার পর পূর্ব ইউক্রেনে আগ্রাসনের নতুন ধাপ শুরু করেছে রুশ বাহিনী। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলকে লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। অঞ্চলটির একাংশ মস্কোপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে। জানা গেছে, ইউক্রেনে রুশ হামলা থেকে বাঁচতে অনেক পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকে আগেভাগেই আশ্রয় নিয়েছেন বাঙ্কারে। সেখানেও দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার সংকট। কবে স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি জানা নেই কারও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৪ সালে যে কৌশলে ক্রিমিয়া দখলে নিয়েছিল রাশিয়া, এবারো একই পথে হাঁটছে তারা। যুদ্ধে সফলতা দেখাতে যে কোনো মূল্যে অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় পুতিন সরকার। এদিকে রাশিয়ার দাবি, শুধু মারিউপোলেই ইউক্রেনের চার হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছে। তবে আড়াই থেকে তিন হাজার সেনার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে কিয়েভ।
আরও পড়ুন
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ: জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
শ্রীলঙ্কায় প্রতিযোগিতা চলাকালে রেসিং কারের ধাক্কায় নিহত ৭
জাপানে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: নিখোঁজ সাত ক্রুর সন্ধানে অভিযান চলছে