ইয়াছিন রনি, ফেনী :
মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়া সুমি রায়ের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলন। সুমি রায় ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের মজুমদার বাড়ীর পরিমল চন্দ্র ও শিখা রাণী রায়ের প্রথম সন্তান। তারা এক বোন ও এক ভাই। ভাই বোনের মধ্যে সুমি বড়। তার ছোট ভাই কর্ণজিৎ রায় সিলোনীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনির ছাত্র।
জানা যায়, ক্ষুদ্র পান বিক্রেতা হতদরিদ্র পরিমল চন্দ্র রায়ের মেয়ে সুমি রায় ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় খুব আগ্রহী ছিলেন। কৃতিত্বের সঙ্গে সব পথ পাড়ি দিয়ে পড়াশোনায় সাফল্য এনেছেন তিনি। জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসএসসি ও এইচএসসিতেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ-৫।
পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সার্বিক সহযোগীতায় সুমি তার লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন। অক্লান্ত পরিশ্রম করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন সে। নিজের প্রচেষ্টা, মা-বাবার ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় মেডিকেল কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সফলতা অর্জন করেছেন তিনি। তার এই সাফল্যের সংবাদে আনন্দ উৎসবের আমেজ বইছে হীরাপুর গ্রামে। বন্ধু-বান্ধব ও এলাকাবাসীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন সুমি। তার সাফল্যের খবর পেয়ে তাদের বাড়ীতে ছুটে যান ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, বিএমএ ফেনী জেলা সভাপতি ডা. শাহেদুল ইসলাম কাওসার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলনসহ গর্বিত শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা। এসময় তারা সুমির পড়াশোনার জন্য আর্থিক সহযোগীতা করেন।
তবে মেডিকেলে চান্স পেয়েও তার মুখ মলিন। পড়াশোনার খরচ কিভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। এবার তাকে ভর্তি হতে হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তার মেডিকেলে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার বাবার ক্ষুদ্র আয়ে ৪ সদস্যের পরিবারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর মধ্যে তার মেডিকেলে ভর্তি ও পরবর্তী খরচ চালানোর মত সামর্থ্য নেই তার বাবার।
সুমি জানান,আমার বাবা একজন ক্ষুদ্র পান ব্যবসায়ী। অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চলে। এত কষ্টের মধ্যেও আমার বাবা আমাদের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমার ইচ্ছা ছিল আমি ডাক্তার হব। সে ইচ্ছানুযায়ী মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষায় অংশ নিয়ে আমি কৃতকার্য হই। কিন্তু ভর্তি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকে আমার ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আমার পরিবার। ভর্তির এত টাকা ও ভর্তির পর আমার পড়াশোনার খরচ চালানোরমত সামর্থ্য আমার দরিদ্র বাবার নেই। আমার মেডিকেলে ভর্তি প্রায় অনিশ্চিত হওয়ার পথে। ঠিক সেসময় আমাদের পাশে এসে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলন। তিনি আমাকে আশ্বাস দেন যে, আমার ভর্তি ও পরবর্তী পড়ালেখার খরচ তিনি বহণ করবেন। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশীদ মিলন বলেন, সুমি আমার ইউনিয়নের সন্তান। সে আমাদের মুখ উজ্জল করেছে, তার এ কৃতিত্বে আমরা গর্বিত। তাই নিজের সন্তানের মতো বিবেচনা করে তার শিক্ষাজীবন শেষ করা পর্যন্ত পাশে থাকব।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি