‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামায় দিছিলাম’ এক আলোচনা সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের এমন মন্তব্যে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক আইনজীবী।
আপিল বিভাগে করা এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৫ জুন) চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ১৪ আগস্ট দিন রেখেছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মহসিন রশিদ। সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, মামলার বাদী অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল ও অ্যাডভোকেট মামুন মাহবুব।
তাপসের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির এবং সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলালসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত রবিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল এ মামলা করেন।
মামলায় আদালত অবমাননামূলক বক্তব্যের কারণে মেয়র তাপসকে আদালতে তলব করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
সরকার সমর্থকদের একতরফা নির্বাচনের প্রতিবাদে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ আইনজীবীদের ব্যাণারে ডাকা তলবি সভা থেকে গঠিত অ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদল।
এর আগ গত ২৩ মে একটি জাতীয় দৈনিকে মেয়র তাপসের ওই বক্তব্য প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আমি নগর ভবন থেকে শুনি যে আমার নেতাকর্মীদের গায়ে হাত দেয়া হয়। মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি।
যেখানে মুগুর দেয়ার সেটাও জানি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম।
মশিউজ্জামান (বারের গত নির্বাচনের সাব কমিটির প্রধান)কে আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কী জানি ফেরেস্তা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান।
যে সকল সুশীলরা আমাদেরকে বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সকল সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেবো।
গত ২৪ মে ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’- ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের এই বক্তব্য আপিল বিভাগের নজরে আনেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির তলবী সভার সভাপতি ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম।
এসময় তার সঙ্গে বিএনিপন্থি সব শীর্ষ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপিল বিভাগে ওই বক্তব্য তুলে ধরে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিচার বিভাগের দিকে তাকিয়ে থাকে। মেয়র বলেছেন একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। গর্ব করে, যা দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি পত্রিকায় প্রকাশিত তাপসের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ব্যারিস্টার তাপস তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ গঠনের আগেও অনেক বড় বড় আইনজীবী নেতা ছিলেন। কিন্তু যখন এই সংগঠন গঠন করা হয় তখন কিন্তু এইসব বিজ্ঞ, খ্যাতনামা, প্রাজ্ঞ, বড় বড় নেতাদের বাদ দিয়ে আমাদের মতো ছোট আইনজীবীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ গঠন করা হয়। সুতরাং এগুলো ভুললে চলবে না। সবাই খালি ইতিহাস ভুলে যায়। ইতিহাস ভুললে চলবে না।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা একটু দেখি। এখন কোর্টের কাজ করি।’
আইনজীবী শাহ আহমদ বাদল সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছি।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম