November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, November 24th, 2021, 9:40 pm

মেয়র আব্বাসের নামে ডিজিটাল আইনে মামলা

জেলা প্রতিনিধি:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় গত মঙ্গলবার রাতে এই মামলার এজাহার দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমোদন সাপক্ষে বুধবার (২৪ নভেম্বর) মামলাটি গ্রহণ করা হয়। রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, একই অভিযোগে বোয়ালিয়া, রাজপাড়া ও চন্দ্রিমা থানায়ও মামলার এজাহার দেওয়া হয়েছিল। তবে বোয়ালিয়া থানার মামলাটি আপাতত রেকর্ড করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের জন্য বাকি দুটি মামলা বিবেচনাধীন। রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল মোমিন বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলাটি রেকর্ড করে থানার এসআই শাহাবুল আলমকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান বোয়ালিয়া থানার এই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এদিকে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরমেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগে রাজপাড়া ও চন্দ্রিমা থানায় আরও দুটি মামলার এজাহার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রাজপাড়া থানায় এবং মহানগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন চন্দ্রিমা থানায় এজাহার দিয়েছেন। পৌরমেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে তারাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে চান। মামলা দুটি বর্তমানে বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে, রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠে থাকা কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী একটি ঘোরায় বৈঠকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের কাটাখালী পৌরসভার অংশের উন্নয়নকাজ নিয়ে কথা বলার সময় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তি করেন। এ ঘটনার অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁসের পর তিনিও ফেঁসে যান। অডিওতে মেয়র বলেন, ‘একটু থাইমি গেছি গেটটা নিয়ে, একটু ডিজাইন চেঞ্জ করতে হচ্ছে। বড় হুজুরের সঙ্গে আমাদের এক লোক বসেছিলে, বসি যে ম্যুরালটা দিছে বঙ্গবন্ধুর, এটা ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক সঠিক না। এজন্য আমি ওকে থুব না। সব করবো, যা কিছু আছে, খালি শেষ মাথাতে মানুষ যেটা মাইন্ড করবে না ওড্যাই। আমি দেখতে পাছি যে, ম্যুরালটি ঠিক হবে না দিলে। আমার পাপ হবে। তো কেন দেব? দেব না, আমি তো কানা লোক না, আমাক বুঝাই দিছে। এজন্য আমি ওটাকে চেঞ্জ করছি।’ সোমবার রাত থেকে মেয়র আব্বাসের এমন দুটি অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে। এরইমধ্যে দাবি উঠেছে গাজীপুরের মেয়রের মতো কাটাখালি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার। ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপটিতে মেয়র আব্বাসকে বলতে শোনা যায়, ওই গেটটি দ্রুত নির্মাণ হবে। তবে আমরা যে ফার্মমে কাজটি দিয়েছি, তারা গেটের ওপরে বঙ্গববন্ধুর যে ম্যুরাল বসানোর ডিজাইন দিয়েছে, সেটি ইসলামি দৃষ্টিতে সঠিক না। তাই আমি সেটিকে বাদ দিতে বলেছি। মেয়র বলেন, যেভাবে বুঝেছে তাতে আমার মুনে হইছে যে, ম্যুরালটা হইলে আমার ভুল হয়্যা যাবে। এজন্য চেঞ্জ করছি। এই খবরটাও যদি আবার যায় তো আবার রাজনীতি শুরু হয়ে যাবে। ওই বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল দিতে চাইয়া দিচ্ছে না! বঙ্গবন্ধুক খুশি করতে যাইয়া নারাজ করব নাকি? এইডা লিয়েও রাজনীতি করবে কিন্তু আমি সিওর। তবে, মেয়র আব্বাস আলী দাবি করেছেন তিনি এই ধরনের কোনো মন্তব্যই করেননি। কেউ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আব্বাস আলী কাটাখালি পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক। ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তিনি প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয় বারের মত মেয়র নির্বাচিত হন।