অনলাইন ডেস্ক :
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হয়েছে গত (২ মার্চ)। মেয়াদ শেষের এক মাস পেরিয়ে গেলেও বাসভবন ছাড়েননি তিনি। করোনাকালের পুরোটা সময় তিনি ভিসির বাসভবনে অফিস পরিচালনা করেছেন। সেই অফিসের সবকিছু এখনও ফারজানা ইসলামের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমান রুটিন দায়িত্বে থাকা ভিসি অধ্যাপক নূরুল আলমবলেন, নতুন কেউ নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সাবেক ভিসি বাসভবনে থাকতে পারবেন, এমন কোনও নিয়ম নেই। আমি রুটিন দায়িত্ব পালন করছি, আমার কাজ হলো অফিসের কাজ করা; উপাচার্যের বাসভবনে তো আর আমি উঠতে পারি না। সাবেক ভিসি তাহলে কোন নিয়মে বাসভবনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নূরুল আলম মন্তব্য করতে চাননি। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের ১১.১ এর ধারা অনুযায়ী, আচার্য সিনেট কর্তৃক মনোনীত তিন ব্যক্তির একটি প্যানেল থেকে অধ্যাদেশের নির্ধারিত নিয়ম ও শর্তাবলী মেনে একজনকে চার বছরের জন্য ভিসি নিযুক্ত করবেন। আচার্য যোগ্য মনে করলে পূর্ববর্তী ভিসিকে সর্বোচ্চ চার বছরের জন্য পুনরায় দায়িত্ব দিতে পারেন। অধ্যাদেশের কোনও ধারাতেই কোনও ব্যক্তিকে তৃতীয়বার উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়ার বিধান এবং নজির নেই। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, ফারজানা ইসলাম বাসভবনে থেকে ভিসির আসনে বসার যে স্বপ্ন বুনছেন তা সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদবলেন, সাধারণ প্রথা হলো মেয়াদ শেষ হলে বাসভবন ছেড়ে দেওয়া। তবে তার যদি জরুরি প্রয়োজন থেকে থাকে তবে সেটা জানানো উচিত, তিনি কতদিন থাকবেন বা কি প্রয়োজনে থাকবেন। ভিসি একটা পদ, পদের মেয়াদ শেষ মানে তার বাসভবনও ছেড়ে দেওয়া উচিত। এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ঝামেলাটা বাধিয়েছে সরকার। নতুন উপাচার্য কে হবে তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে। এটা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, এখানে সহজ উপায় হলো সিনেট সিদ্ধান্ত দিবে। সরকার ঝুলিয়ে রেখেছে কারণ ইতোপূর্বে দেখেছি প্রশাসনে তাদের মন মতো লোক খুঁজে তারপর নিয়োগ দেয়। সরকারের উচিত দ্রুত এটা সমাধান করাস। আর ফারজানা ইসলামেরও উচিত জরুরি কোনও প্রয়োজন থাকলে অনুমতি নিয়ে বাসভবনে থাকা, অন্যথায় ছেড়ে দেওয়া। ২০১৪ সালে অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম প্রথম মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পান। প্রথম মেয়াদ শেষ হলে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবারও তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই বছর ২ মার্চ তিনি দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্ব শেষ হয় এ বছরের মার্চ মাসের ২ তারিখ। উল্লেখ্য, জাবির চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির ঘটনায় বেশ আলোচিত হন অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এমনকি এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ দিয়ে হামলা করিয়ে সেটিকে গণঅভ্যুত্থান আখ্যা দেওয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি। এ ছাড়া ২০১৭ সালে একটি ঘটনায় আন্দোলনকারী ৬৪ শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেন ফারজানা ইসলামের প্রশাসন। এই আন্দোলনে উপাচার্য কাঁঠাল তত্ত্বের উদ্ভব ঘটান বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা