November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, March 12th, 2023, 8:39 pm

ম্যাথিউসের সেঞ্চুরি, শেষ দিনের অপেক্ষা

অনলাইন ডেস্ক :

ধৈর্য, টেকনিক, শৃঙ্খলা, প্রতিজ্ঞা-সবকিছুর দারুণ সম্মিলন ফুটিয়ে তুললেন যেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ক্রিজ আঁকড়ে রাখলেন আস্থার প্রতিমূর্তি হয়ে। এই যুগে টেস্ট ব্যাটিংয়েও যখন দেখা যায় রান আর রোমাঞ্চের তাড়া, ম্যাথিউস দেখালেন ‘ওল্ড স্কুল’ ঘরানার ব্যাটিংয়ের কার্যকারিতা। দলের প্রয়োজনে উপহার দিলেন তিনি দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। তবে তার সেঞ্চুরি পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল নিউ জিল্যান্ডের বোলাররা। তাতে ম্যাচ পৌঁছে গেল রোমাঞ্চকর মোড়ে। জমজমাট এক শেষ দিনের অপেক্ষায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। সম্ভব এখনও সবকটি ফলাফলই। চার দিন শেষে এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখা কঠিন কোনো দলকে। জয়ের জন্য শেষ দিনে নিউ জিল্যান্ডের প্রয়োজন ২৫৭ রান, শ্রীলঙ্কার ৯ উইকেট। ম্যাথিউসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে তোলে ৩০৫ রান। একসময় যদিও মনে হচ্ছিল, আরও বড় হবে স্কোর। তবে শেষ ৫ উইকেট নিউ জিল্যান্ড তুলে নেয় অল্প রানে। প্রথম ইনিংসের ১৮ রানের লিড মিলিয়ে নিউ জিল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮৫ রানে। দিন শেষ করে তারা ১ উইকেটে ২৮ রানে। শ্রীলঙ্কা দিন শুরু করে ৩ উইকেটে ৮৩ রান নিয়ে। ম্যাথিউস অপরাজিত ছিলেন ২০ রানে। দলকে উদ্ধারের মূল দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান মেলে ধরেন তার অভিজ্ঞতার সবটুকু। নাইটওয়াচম্যান প্রবাথ জয়াসুরিয়াকে দিনের শুরুতেই হারায় শ্রীলঙ্কা। ৯৫ রানে ৪ উইকেট হারানো দলের হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমাল। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে একটু একটু করে সরিয়ে দেন চাপ। গড়ে তোলেন শতরানের জুটি। ম্যাথিউস ফিফটি করেন ১৩৯ বলে। চান্দিমাল অবশ্য পারেননি। তাকে ৪২ রানে বোল্ড করেই ১০৫ রানের জুটি ভাঙেন টিম সাউদি। এরপর ম্যাথিউসের সঙ্গে জুটিতে সঙ্গী হন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এই জুটিও দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন শ্রীলঙ্কাকে। চা বিরতির একটু আগে ব্লেয়ার টিকনারকে টানা দুটি চার মেরে ম্যাথিউস সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ২২৬ বলে। তার চতুর্দশ টেস্ট সেঞ্চুরি এটি। নিউ জিল্যান্ডে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন সবশেষ সফরেও। তবে সেঞ্চুরির পর আর বেশিদূর এগোতে পারেননি ম্যাথিউস। চা বিরতির পরই ম্যাট হেনরি বল শরীর থেকে দূরে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। তার ইনিংস থামে ২৩৫ বল খেলে ১১৫ রানে। হেনরি পরের ওভারে নিরোশান ডিকভেলাকে ফিরিয়ে দেন রান করার আগেই। পরে লোয়ার অর্ডারে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি ধনাঞ্জয়াকে। শ্রীলঙ্কার ইনিংস তাই থমকে যায় ৩০০ পেরিয়েই। ধনাঞ্জয়া অপরাজিত থাকেন ৭৩ বলে ৭ চারে ৪৭ রান করে। ৪২ রানের মধ্যে শেষ ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা ব্লেয়ার টিকনার ৪ উইকেট নেন ১০০ রানে। নিউ জিল্যান্ডকে ভুগতে হয় নিল ওয়্যাগনারকে না পেয়ে। চোটের কারণে এ দিন কোনো বল করতে পারেননি কিউইদের বোলিং আক্রমণের গুরুত্বপূর্ণ এই অস্ত্র। ২৮৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নিউ জিল্যান্ড বড় ধাক্কা খায় পঞ্চম ওভারে ডেভন কনওয়েকে হারিয়ে। লঙ্কান পেসাররা দুর্দান্ত বোলিংয়ে কঠিন পরীক্ষা নেন কিউই টপ অর্ডারের। বিশেষ করে কাসুন রাজিথা ও আসিথা ফার্নান্দো দুই পাশ থেকে চেপে ধরেন কিউইদের। তবে টম ল্যাথাম ও কেন উইলিয়ামসন সেই সময়টুকু পার করে দেন দাঁতে দাঁত চেপে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৫৫
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৭৩
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৮৩/৩) ১০৫.৩ ওভারে ৩০৫ (ম্যাথিউস ১১৫, জয়াসুরিয়া ৬, চান্দিমাল ৪২, ধনাঞ্জয়া ৪৭*, ডিকভেলা ০, রাজিথা ১৪, কুমারা ৮, আসিথা ০*; সাউদি ২৬.৩-৯-৫৭-২, হেনরি ২৮-৫-৭১-৩, টিকনার ২৮-১-১০০-৪, ওয়্যাগনার ৩-০-৯-০, মিচেল ১২-২-৩১-০, ব্রেসওয়েল ৮-১-২৭-০)
নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৮৫ ) ১৭ ওভারে ২৮/১ (ল্যাথাম ১১*, কনওয়ে ৫, উইলিয়ামসন ৭*; রাজিথা ৬-৪-৫-১, আসিথা ৬-২-৯-০, জয়াসুরিয়া ৩-০-১০-০, কুমারা ২-২-০-০)।