ময়মনসিংহ থেকে কাফি খান:
অপহরণের দীর্ঘ সাড়ে তিনমাস পর অপহৃত ভিকটিম স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার’কে উদ্ধার করল ময়মনসিংহ পিবিআই। গত ২৪ আগষ্ট রাত ১১ঘটিকারয় ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানাধীন খালপাড় চড়াইল এলাকা থেকে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। বুধবার ২৫ আগষ্ট ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার’কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে স্বেচ্ছায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বুধবার সন্ধ্যায় জানান, সুমাইয়া আক্তার (১২), পিতা-মোঃ আবুল কালাম (৪৫), সাং-মরিচার (টান মলামারী), থানা-ঈশ্বরগঞ্জ, জেলা-ময়মনসিংহ ত্রিশাল থানাধীন কালির বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার তার খালা সখিনা বেগম, স্বামী-রহম আলী, সাং-বালিয়া ধরা, থানা-ত্রিশাল, জেলা-ময়মনসিংহ এর বাসায় থেকে লেখাপড়া করত। বিবাদী রাসেল মিয়া (২৩) ভিকটিমের খালার বাসায় স্ত্রী সন্তানসহ ভাড়া থেকে ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। বিবাদী রাসেল মিয়া সুযোগ পেলেই ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার’কে নানা অঙ্গ-ভঙ্গিতে কু-প্রস্তাব দিত। বিষয়টি ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার তার বাবাসহ খালা ও খালু’কে বিষয়টি জানালে তারা বিবাদী রাসেল’কে সতর্ক করে দেয় এবং বাসা ছেড়ে দিতে বললে বিবাদী রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ঘটনার দিন ০৯/০৫/২০২১ সময় সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার স্কুলের উপ-বৃত্তির টাকার খবর নেওয়ার জন্য কালির বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসে নাই।
ভিকটিমকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে ভিকটিমের বাবা ত্রিশাল থানায় নিখোঁজের বিষয়ে জিডি নং-২০১,তাং-০৫/০৬/২০২১ করে। পরবর্তীতে ভিকটিম তার ব্যবহৃত মোবাইল হতে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে জানায় যে, ঘটনার দিন ভিকটিম কালির বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে রেলক্রসিং এ পৌছা মাত্রই বিবাদী রাসেল তার সহযোগীদের নিয়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখে গামছা বেধে জোর পূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে অজ্ঞাতনামা স্থানে নিয়ে আটক করে রাখে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মোঃ আবুল কালাম বাদী হয়ে বিবাদী রাসেলের বিরুদ্ধে আদালতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার সিআর মামলা নং-১১১/২১, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৭/৩০ দায়ের করেন।
ডিআইজি পিবিআই বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশে পিবিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোস্তাক আহমেদ মামলাটি তদন্ত করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের অবস্থান শনাক্ত পূর্বক গত ২৪/০৮/২০২১ খ্রিঃ রাত অনুমান ১১.০০ ঘটিকায় ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানাধীন খালপাড়, চড়াইল এলাকায় বিবাদী রাসেলের ভাড়া বাসা হতে ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার’কে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই এর এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী অপহরণ ঘটনা। আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই ময়মনসিংহ জেলাকে প্রদান করা হলে পিবিআই কর্তৃক অত্র মামলার ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার’কে উদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এক পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার’কে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানাধীন খালপাড়, চড়াইল এলাকায় বিবাদী রাসেলের ভাড়া বাসা হতে উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি