অনলাইন ডেস্ক :
পরিবহণ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে ঘানার মতো উন্নয়নশীল দেশে। যানজট, উত্তাপ, দূরত্বের মতো কারণে আক্রার মানুষের সমস্যার শেষ নেই। বিশেষভাবে তৈরি ই-বাইক এই সমস্যা কিছুটা হলেও কমাতে পারছে। ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, ঘানার রাজধানী আক্রায় পরিবহণ ব্যবস্থা এখন দুঃস্বপ্নের মতো। বেশিরভাগ সময়েই গরম থাকে। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গার দূরত্বও অত্যন্ত বেশি। নিজে গাড়ি চালালে অথবা গণ পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যবহার করলে যানজটে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়। বিশেষ করে ব্যস্ততম সময়গুলোতে যাতায়াতের সময় তিন গুণ বেশি হতে পারে। ফলে ঘানার মানুষ আরও বেশি করে দুই চাকার যানের দিকে ঝুঁকছেন।
লরেন্স আগইয়েই একজন পেশাদার সাইক্লিস্ট। বহু বছর ধরে তিনি ভিন্ন ধরনের ই-বাইক তৈরি করছেন। লরেন্স বলেন, ‘‘আমার বাইকের বিশেষত্ব হলো, প্রথমত আমি খারাপ হয়ে যাওয়া রিসাইকেল্ড ল্যাপটপ ব্যাটারি ব্যবহার করি। দ্বিতীয়ত আমি সেটির জন্য উচ্চ মানের যন্ত্রাংশ কিনি। সেগুলি খুবই শক্তিশালী। যেমন চীনা ফ্রেমের তুলনায় সেটি অনেক বেশি মজবুত। খুব কম বয়সেই আমি সেই কাজ শুরু করি। তখন বয়স সম্ভবত ১১ ছিল। মিউজিক ভিডিওয় মানুষকে ই-স্কুটার চালাতে দেখে নিজেই এমন একটি যান তৈরির সাধ হয়েছিল। তখন থেকেই এই ই-বাইক তৈরির পথে অগ্রসর হলাম।’’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৬ বছরের এই তরুণ নিজেই সব কাজ শিখেছেন। তিনি প্রায় প্রতিদিনই ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখেন এবং নিজের ই-বাইকে রদবদল করেন।
অবশিষ্ট যন্ত্রাংশের অর্ডার লরেন্স ইন্টারনেটে দিয়ে থাকেন। রাসেল মেনসা বড় আকারে চীনে তৈরি ই-বাইক বিক্রি করেন। কিন্তু সেগুলির অনেক সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সঙ্গের ব্যাটারি তেমন টেকসই ছিল না। সবচেয়ে কম সময়ে সেটি আসার পর ক্রেতারা অভিযোগ করতে লাগলেন।’’ রাসেলের মতে, ই-বাইক সম্পর্কে ঘানার মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। তিনি মাসে প্রায় আটটি ইউনিট বিক্রি করেন। কিন্তু দাম কম নয়। একটি ই-বাইকের জন্য ৩০০ থেকে ১,১০০ ইউরো গুনতে হয়। রাসেল বলেন, ‘‘ঘানায় ই-বাইকের বিশাল চাহিদা। ঘানার মানুষ ই-বাইক খুব ভালোবাসেন। দশ বছর আগে কেউ ই-বাইক সম্পর্কে জানতো না। মাত্র তিন-চার বছর আগে ই-বাইক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।’’প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, লরেন্সের জন্য শুধু ই-বাইক চালানোই আনন্দের কারণ নয়। বিশেষ করে জ¦ালানির দাম বাড়া সত্ত্বেও সস্তায় ও দ্রুত যাতায়াত করার সুযোগও পাচ্ছেন তিনি।
একবার চার্জ দিলে তাঁর ই-বাইকগুলি ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে। লরেন্সের ক্রেতা সাইমন গাডা নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘‘আমার কাজের জায়গা অনেক দূরে বলে আমি এটি কিনেছি। প্রথমে ভেবেছিলাম মোপেড কিনবো। তারপর লরেন্সকে আমার অবস্থার কথা বলায় সে বললো, আমার জন্য কিছু একটা করবে।’’ সংশ্লিষ্টরা জানায়, ব্যাটারির পারফরমেন্সের উপর নির্ভর করে লরেন্সের ই-বাইকের দাম ৬০০ থেকে ৮৬০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। এখনো পর্যন্ত লরেন্স নিজের তৈরি সাতটি ই-বাইক বিক্রি করতে পেরেছেন। এখন তিনি নিজের ই-বাইকের স্বপ্ন আরও বড় আকারে কার্যকর করতে চান।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু