এপি, ইউক্রেন :
রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের ফ্ল্যাগশিপ যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা বৃহস্পতিবার ডুবে গেছে। মস্কোভা ছিল একটি গাইডেড-মিসাইল ক্রুজার। যুদ্ধের শুরু থেকেই রুশ বাহিনী মস্কোভা ব্যবহার করে ইউক্রেনের ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল।
তবে কৃষ্ণসাগরে অবস্থিত রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম জাহাজটিতে কিভাবে আগুন লাগল তা নিয়ে দুই রকম দাবি করেছে কিয়েভ আর মস্কো।
কিয়েভের দাবি, যুদ্ধজাহাজে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। মিসাইল হামলায় জাহাজটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটি। কৃষ্ণসাগরে অবস্থিত জাহাজটিতে বুধবার হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের ওডেসার গভর্নর।
তবে রাশিয়া মস্কোভা মিসাইল ক্রুজার নামে ওই যুদ্ধজাহাজে বিস্ফোরণ ও আগুন ধরে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। যদিও এর কারণ হিসেবে তারা ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলার কথা স্বীকার করেনি।
রাশিয়ার রাজধানীর নামে নামকরণ করা এই যুদ্ধজাহাজের ধ্বংস হওয়া কৃষ্ণ সাগরে তাদের সামুদ্রিক অবস্থান পর্যালোচনার দিকে নিয়ে যাবে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার সর্বশেষ গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে।
জাতির উদ্দেশ্যে তার রাতের ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোভার ডুবে যাওয়ার বিষয়টি ইঙ্গিত করে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অষ্টম সপ্তাহে প্রবেশ করছে। ইউক্রেনীয়দের গর্বিত হওয়া উচিত, কারণ রাশিয়ানরা ‘আমাদের সর্বোচ্চ পাঁচদিন’ সময় দিয়েছিল বেঁচে থাকার জন্য, কিন্তু আক্রমণের ৫০ দিন পরেও আমরা বেঁচে আছি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজটি ডুবে যায়। রাশিয়া এর আগে বলেছিল জাহাজটিতে আগুন লেগেছে এবং সেখানে থাকা ৫০০ নাবিককে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এরপর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার কথাও জানানো হয়।
সোভিয়েত-যুগের জাহাজ মস্কোভা ১৯৭৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে। তবে পরবর্তীতে ব্যাপক সংস্কারের পর ২০২১ সালে ফের জাহাজটির কার্যক্রম শুরু হয়। ১৬টি দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করার ক্ষমতা ছিল মস্কোভার। এটি ডুবে যাওয়ার ফলে কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার শক্তি হ্রাস পেয়েছে।
যুদ্ধের শুরুর দিকে মস্কোভা জাহাজে অবস্থানরত রুশ সেনারা কৃষ্ণ সাগরের স্নেক দ্বীপে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছিল। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এ তথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ বুধবার বলেছেন, শহরের একটি ধাতু কারখানায় এক হাজার ২৬ জন ইউক্রেনীয় সেনা আত্মসমর্পণ করেছে।
তবে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ভাদিম ডেনিসেনকো এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি কারেন্ট টাইম টিভিকে বলেছেন ‘সমুদ্রবন্দর নিয়ে যুদ্ধ আজও চলছে।’
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২