নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :
রংপুরের তারাগঞ্জে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৯ জন নিহত ও অন্তত ৫৭ জন আহতের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের খারুভাজ ব্রীজের পশ্চিম মাথায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে ৫ জন নিহত হয় ও হাসপাতালে নেওয়ার পর আরো ৪ জনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ।
সোমবার তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাইওয়ে থানা থেকে অদূরে খারুভাজ ব্রীজ পার হলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ঠাকুরগাঁও গামী জোয়ানা পরিবহন বাসের সামনের ডান দিকের চাকা বাস্ট হয়ে বাসটির চালক নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে সড়কের ডান দিকে চলে যায়। এসময় দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী দ্রুতগতিতে থাকা ইসলাম পরিবহনের বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তুমুল বৃষ্টিপাতের মধ্যেই তাৎক্ষণিক হাইওয়ে থানা পুলিশ ও পরে তারাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় কয়েকজনকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ(রমেক) হাসপাতালে পাঠালে সেখানে আরো ৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত আরো ৫৭ জন তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাইওয়ে থানা আরো জানায়, ঘটনাস্থলে পাশর্^বর্তী নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কুন্দুল পূর্বপাড়া গ্রামের মোঃ মকবুল হোসেনের ছেলে মহসিন হোসেন সাগর (৪০), তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিনের পুত্র আনিসুর রহমান (৪৮), উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের পুত্র আনোয়ার হোসেন (৩৫), মানিকগঞ্জ জেলার বাকলা থানার শিবালয় গ্রামের আব্দুল খালেক ও ফিরোজা বেগমের পুত্র শহিদুল ইসলাম খোকন (৪২) ও অজ্ঞাতনামা আরো একজনের লাশ উদ্ধার করে হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। এরমধ্যে সাগর, আনিসুর ও আনোয়ারের পরিবারের লোকজন থানায় এসে লাশ সনাক্ত করায় পরিবারের হাতে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
হাইওয়ে থানা সূত্রে আরো জানা যায়, হাসপাতালে নেওয়ার পর তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামের মৃত বিনোদ চন্দ্রের পুত্র ধনঞ্জয় (৪৫), সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের রায়হান আলীর পুত্র অলিভান হাসান জুয়েল (২৭), গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলার উত্তর বিদারী গ্রামের ফরাজ আলী ব্যাপারীর পুত্র সাদেক আলী ও অজ্ঞাতনামা আরো একজনের মৃত্যু হয়। তাদের লাশ রমেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
হাইওয়ে থানা ওসি মাহবুব মোর্শেদ বলেন, বাস দুইটিই অত্যন্ত দ্রুতগতির ছিল। দূর্ঘটনার সময় প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হওয়ায় চালকেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আমরা তাৎক্ষণিক উদ্ধার কাজে অংশ নেই। তবে বৃষ্টির কারণে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাব্বির আহমেদ বলেন, স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নেতৃবৃন্দ রমেক রাতেই হাসপাতালে ছুটে যায়। এসময় আহত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন, খাবার ও রক্তের ব্যবস্থা করে দেই। আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানিম আহসান চপল নিজেও চিকিৎসাধীন এক মুমূর্ষু রোগীকে এক ব্যাগ রক্ত দিয়েছেন বলে জানান ।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি