নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :
ধারের ১০ হাজার টাকা ফেরত চাওয়ায় পুত্রবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করে শ্বশুর ও ননদ। বুধবার (১২ এপ্রিল) রাত পৌনে ১১টায় র্যাব-১৩ রংপুর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই তথ্য জানান অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
র্যাব-১৩ অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, রংপুর মহানগরীর নাচনিয়া মাহিগঞ্জ এলাকার স্বপন মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম (২৩) এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেন তার ননদ খাসবাগ এলাকার রমজান আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম (৩২)। এর কয়েক মাস পর গত ২৪ মার্চ সেই টাকা ননদ আলেয়ার কাছে ফেরত চান সালমা। এ নিয়ে শুরু হয় পারিবারিক বিরোধ ও ঝগড়া।
গত ২৮ মার্চ এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক এবং ঝগড়া শুরু হলে সালমার স্বামী স্বপন এর প্রতিবাদ করেন। স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে বাবা ও বোনের ওপর রাগারাগি করেন। এ সময় সালমার শ্বশুর আক্তার হোসেন ও ননদ আলেয়া বেগম সালমা বেগমের ঘরে ঢুকে তাকে বেদম মারপিট করেন। এক পর্যায়ে সালমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
র্যাব-১৩ অধিনায়ক আরও জানান, ঘটনার সময় স্বামী স্বপন মিয়া তার স্ত্রী সালমা বেগমকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও দগ্ধ হন। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা সালমাকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সালমার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১ মার্চ মারা যান সালমা বেগম। এদিকে স্বামী স্বপন মিয়া চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হয়েছে। কিন্তু সালমার মৃত্যুর পরপরই তার শ্বশুর ও ননদসহ অন্যান্যরা গা ঢাকা দেন।
কমান্ডার ইসলাম জানান, সামলার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। তখন ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব-১৩। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গোপন নজরদারির মাধ্যমে বুধবার সকালে মামলার প্রধান আসামি নিহত সালমার শ্বশুর আক্তার হোসেন ও দ্বিতীয় আসামি ননদ আলেয়া বেগম কে র্যাব -১৪ সহযোগীতায় ময়মনসিংহের ফুলবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কেরোসিন দিয়ে সালমাকে পুড়িয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আসামিরা। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন
সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ
সাইবার আইনের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে, গ্রেপ্তাররা মুক্তি পাচ্ছেন
সাবেক এমপি সুজনের জামিন না মঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ