নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর:
রংপুরে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে বঙ্গবন্ধু উচ্চ শিক্ষাবৃত্তির চেক তুলে দেওয়া হয়। আজ রোববার দুপুরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে সংস্থার রংপুর কার্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি ২০২৪ এর চেক প্রদান অনুষ্ঠান’টি আয়োজন করা হয়।
আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক তপন কুমার কর্মকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ)’র এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ফসিউল্লাহ্। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের এডিসি জেনারেল হাবিবুল বাশার রুমি এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ)’র নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ মাজেদুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আরডিআরএস বাংলাদেশের পরিচালক-ক্ষুদ্রঋণ তারিক সাঈদ হারুন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের সহযেগেী অধ্যাপক মো: ওমর ফারুক, রংপুর জিলা স্কুলের শিক্ষক মো: সাফিযার রহমান, সাহিনা সুতানা , সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন প্রমূখ ।
অনুষ্ঠানে ১০ জন শিক্ষার্থীকে দুটি ক্যাটাগরিতে মোট ১ লাখ ৫ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়্। বঙ্গবন্ধু উচ্চ শিক্ষাবৃত্তির আওতায় জনপ্রতি মাসিক ৪ হাজার করে তিন মাসের জন্য একত্রে ১২ হাজার হিসাবে ৫ জনকে ৬০ হাজার এবং ডিপ্লোমা কোর্স শিক্ষাবৃত্তির আওতায় ৫ জনকে জনপ্রতি মাসিক ৩ হাজার করে মোট ৪৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় এমআরএ’র এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ফসিউল্লাহ বলেন,জাতির পিতা ২৪ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করে আমাদেরকে একটি দেশ দিয়ে গেছেন। উত্তরাঞ্চলের বাতিঘরতুল্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বাধীনতার পর থেকেই এ অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন- বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি তোমাদের প্রতি দয়া নয়, এটা তোমাদের অধিকার। তবে তোমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ মানুষ হতে হবে। শুধু নিজের কিংবা পরিবারের জন্য নয়, দেশের জন্য কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ তো তোমরাই শাসন করবে। তিনি আরডিআরসকে এ কর্মসূচি পরিচালনা ও অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আগামীতে বৃত্তির চেকের সাথে বঙ্গবন্ধুর লেখা একটি করে বই উপহার দেয়ার পরামর্শ দেন।
রংপুরের এডিসি জেনারেল হাবিবুল বাশার রুমি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ২১০০ ডলার এবং ৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ এটা দাঁড়াবে ১২ হাজার ডলারে। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের এ যাত্রায় ছাত্রদেও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিাকা। তিনি বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকে অন্তত ৫জনের লেখাপড়ার শেষ পর্যন্ত শিক্ষাব্যয়ের দায়িত্ব নেয়া যায় কিনা তা ভেবে দেখার জন্য আরডিআরএস-এর প্রতি আহবান জানান।
এমআরএ’র নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ মাজেদুল হক এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- শিক্ষখাএত বিনিয়োগের চেয়ে বড় বিনিয়োগ আর নেই। তাই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের উদ্যোগ। বৃত্তিপ্রাপ্তরা আগামীতে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক তপন কুমার কর্মকার জানান, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটির (এমআরএ) পরামর্শক্রমে সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে জানুয়ারি ২০২২ থেকে আরডিআরএস শিক্ষাবৃত্তি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। শিক্ষাবৃত্তি কর্মসূচি’র আওতায় দু’টি ক্যাটাগরিতে বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু উচ্চ শিক্ষাবৃত্তির আওতায় বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে অধ্যয়নরত নির্বাচিত একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫ বছর পার্যন্ত মাসিক ৪ হাজার টাকা এবং ডিপ্লোমা কোর্স বৃত্তির আওতায় সর্বোচ্চ ৪ বছর প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা কওে প্রদান করা হয়। জানুয়ারি ২০২২ থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষার্থীকে মোট ১৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে। ২০১৪-২৩ পর্যন্ত সময়ে শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রমের আওতায় ৬৬০ জন শিক্ষার্থীকে মোট ৭৯ লাখ ২০ হাজার টাকা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। আগামীতে এ কার্যক্রমের পরিধি আরো বাড়ানোর ইচ্ছে আছে।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা