নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :
রংপুর জেলায় আধুনিক ও উন্নত পদ্ধতিতে মাছ চাষের সাথে সাথে বানিজ্যিকভাবে মাছচাষের কার্যক্রম বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।বর্তমান সময়ে লাভজনকভাবে মাছচাষের মাধ্যমে অধিক উৎপাদন করতে উন্নতমানের ও যথাযথ পুষ্টিসমৃদ্ধ সুষম খাদ্য প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জেলার ৮টি উপজেলার মধ্যে পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, পীরগাছা ও কাউনিয়াসহ ৫টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়নে(জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্প ) এনএটিপি প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জেলায় বহুমাত্রিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে । ১১৪ টি সিআইজি (কমন বেনিফিশিয়ারী গ্রুপ) ও ১টি পিও (প্রডিওসার অর্গানাইজেশন) গঠন করে তাদের উপ-প্রকল্প হিসেবে ২ থেকে ১০টি পিলেট মেশিন এবং ৩ থেকে ২টি পিলেট প্রদান করা হয়।
রংপুর জেলায় বর্তমান সময়ে লাভজনকভাবে মাছচাষের মাধ্যমে অধিক উৎপাদন করতে উন্নতমানের ও যথাযথ পুষ্টিসমৃদ্ধ সুষম খাদ্য প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাখছে । কিন্তু খাদ্যের খরচের দিক বিবেচনা করলে মাছচাষিরা মাছ উৎপাদনের উন্নত কলাকৌশল গ্রহনে অনীহা প্রকাশ করে। মাছের অধিক বৃদ্ধির জন্য মাছকে যথাযথ পুষ্টি প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে খাদ্যে প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য উপাদান পরিমিত মাত্রায় না থাকলে আশানুরূপ উৎপাদন পাওয়া যায় না।
এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মাছের সঠিক পুষ্টি চাহিদার নিরিখে দেশজ উপাদান ব্যবহার করে স্বল্পমূল্যের মৎস্য খাদ্য তৈরিতে পিলেট মেশিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পিলেট মেশিনে তৈরি খাদ্যের গুনগতমান বজায় থাকে। চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের গুনগতমান বৃদ্ধি করা যায় ও স্থানীয়ভাবে প্রাপ্তি সাপেক্ষে খাদ্য উপকরন ব্যবহার করে তৈরি খাদ্যের মূল্য কমানো সম্ভব হয়।
এনএটিপি-২ প্রকল্প হতে প্রাপ্ত ১২টি পিলেট মেশিন সিআইজিভূক্ত মৎস্যচাষির পুকুরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে। নিম্নমানের খাদ্য উপকরণ ও বেশি মূল্যের খাদ্য ব্যবহার করে মাছচাষি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। খাদ্য উপকরণসমূহ বাজার থেকে কিনে নিজস্ব পিলেট মেশিন দ্বারা নিরাপদ খাদ্য তৈরি করছে। শুধু নিজেদের পুষ্টি নয় মাছের পুষ্টি চাহিদা সম্পর্কে সম্যক ধারনা লাভ করেছে। স্বল্প সময়ে অধিক মাছ উৎপাদন করে তারা লাভবান হচ্ছে ফলে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে। মৎস্যচাষিরা উক্ত পিলেট মেশিনে তৈরি খাদ্য দ্বারা নিজেদের পুকুরের মাছের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে পাশাপাশি অন্যান্য দরিদ্র মৎস্যচাষিদের সহযোগিতা করছে।
বদরগঞ্জ উপজেলার পূর্বমাস্টারপাড়া সিআইজি মৎস্য সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সদস্য মো: আল মামুন জানান, ”এনএটিপি-২ প্রকল্প হতে প্রাপ্ত পিলেট মেশিন দ্বারা প্রতি মাসে এক হাজার একশত কেজি মৎস্য খাদ্য তৈরি করা হয়। এভাবে প্রস্তুতকৃত খাদ্যের দাম বাজারের দামের তুলনায় অনেক কম ও সাশ্রয়ী। মাছের উৎপাদনও দ্বিগুন হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশের গ্রামের চাষিরা উক্ত পিলেট মেশিনে তৈরি খাদ্য নিয়ে মাছচাষ শুরু করেছে এবং অন্যান্য চাষিরা তা দেখে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে। আর্থিকভাবে তারা সচ্ছল ও লাভবান হচ্ছেন”।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বরুন চন্দ্র বিশ^াস জানান , রংপুর জেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে এনএটিপি-২ প্রকল্প গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি মাছ চাষে বেকার যুবকদের আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। পিলেট মেশিন প্রদানের ফলে চাষিরা সুলভমূল্যে গুনগতমানের খাদ্য তৈরি করছে। এতে মাছ চাষিরা অনেক লাভবান হচ্ছে”।##
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি