November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, January 5th, 2022, 12:45 pm

রাজধানীতে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে নাকাল সাধারণ মানুষ

ফাইল ছবি

রাজধানীর কাচাঁবাজারগুলোতে শীতের মতো ঝেঁকে বসেছে পণ্যের চড়া দাম। ক্রমবর্ধমান হারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি শীতের মৌসুমেও ভোগাচ্ছে মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক আয়ের মানুষদের।

শামীম গওহর নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা এখন শীতের মাঝামাঝি। এই সময়ে এসে শাকসবজির দাম কমে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু দাম ক্রমাগত বাড়ছেই।

বিভিন্ন কাচাঁবাজার ঘুরে ইউএনবির প্রতিবেদক দেখতে পান, পাইকারি বাজারে সরবরাহ স্বল্প এই অজুহাতে খুচরা বিক্রেতারা সবজি প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করছেন। কিন্তু পাইকারি বিক্রেতাদের দাবি খুচরা বিক্রেতারা অকারণে সবজির দাম বেশি রাখছেন।

কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যা অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল, ভোজ্য তেল, চিনি ও ডালের ক্রমবর্ধমান মূল্যের মতো ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে।

কয়েকটি পাইকারি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর মানের ভিত্তিতে শীতকালীন সবজি ২০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গুলশান, বনানী ও হাতিরপুলের মতো এলাকায় সবজির দামের তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে। কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, মিরপুর, খিলগাঁও, ফকিরাপুল ও মতিঝিলের বাজারগুলোতে সবজির দাম প্রায় একই রকম।

কারওয়ান বাজারে এক পিস করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যেখানে গুলশান ও হাতিরপুল বাজারে একই আকারের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আকার ও মানের ভিত্তিতে ফুলকপি, ব্রুকলি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।

বাজারে শিম কেজি ৮০ টাকা, লম্বা শিম ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, লম্বা বেগুন কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, কুমড়া ৫০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, আলু (নতুন) ৩০ থেকে ৪০ টাকা, স্থানীয় জাতের নতুন আলু ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি, গাজর কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

টমেটো কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁয়াজ (নতুন) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পুরনো পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিভিন্ন ধরনের শাক যেমন- পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি, লাল শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, সবুজ পালং শাক ২০ টাকা ও ধনে পাতা ১২০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, নববর্ষ উদযাপন পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য পরিবার, রেস্তোরাঁ এবং ক্যাটারিং হাউসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে লেয়ার, পাকিস্তানি, সোনালি এবং দেশীয় মুরগির দামও বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মাত্র এক সপ্তাহে ১৫-২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮৫-২০০ টাকা, লেয়ার ২২০-২২৫ টাকা, পাকিস্তানি ৩০০-৩২০ টাকা, সোনালি ৩২০-৩৩০ টাকা এবং দেশি ৪৯০-৫৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কিন্তু গত দুই সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে, যেখানে এক বছর আগের দামের তুলনায় বর্তমান দাম ৪৯ শতাংশ বেশি।

টাঙ্গাইলের বাসাইলের পোল্ট্রি ফার্মের মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, এপ্রিল-আগস্টে লকডাউনের সময় ব্যাপক লোকসানের কারণে খামার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন তার এলাকায় অনেক খামার মালিক। ফলে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

তিনি বলেন, গত এক বছরে পোল্ট্রি ফিডের দাম ৩৫-৪০ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ এখন প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় পৌঁছেছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সেক্রেটারি হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, চাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি, মাছ, মসুর ডাল, ব্রয়লার মুরগি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এক বছরে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও মাছের দাম বৃদ্ধির কারণে দরিদ্র জনগণ তাদের প্রোটিন খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর (ড্যাম)এর তথ্য অনুযায়ী উন্নতমানের আমন চাল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৬ টাকা, মাঝারি মানের আমন চাল ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা কেজি এবং মোটা চাল কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কিন্তু বাজারে বিভিন্ন জাতের চালের দাম ড্যামের ওয়েবসাইটে দেখানো দামের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

—ইউএনবি