রাজপথের কর্মসূচির অনুমোদন না থাকায় মঙ্গলবার দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন রাজধানীর সাতটি পয়েন্টে বিএনপিকে মিছিল বের করতে দেয়নি পুলিশ।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীসহ সারাদেশে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করার কথা ছিল বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর।
অবৈধ ডামি সংসদ বাতিলের দাবিতে রাজধানীর পীরজঙ্গী মাজার, যাত্রাবাড়ীর কদমতলী বাস স্টেশন, নিউমার্কেট ও দয়াগঞ্জ মোড়ের সামনে কালো পতাকা মিছিল বের করার কথা ছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির। আর ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি শাহজাদপুরের সুবাস্তু নজর ভ্যালি শপিং মলের সামনে থেকে, উত্তরা সেকশন-১২ কবরস্থান ও মিরপুর-৬-এর একটি মসজিদের কাছে থেকে কালো পতাকা মিছিল করার কথা ছিল।
বিএনপির নেতাকর্মীরা কালো পতাকা নিয়ে সাতটি স্পটে জড়ো হতে শুরু করলেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই কর্মসূচির অনুমতি না থাকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
এদিকে বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে যোগ দিতে দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেকশনের কবরস্থানের কাছে গেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
ড. মঈন সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয় এবং তাকে একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।
পরে বিএনপি নেতাকে ছেড়ে দিয়ে গাড়িতে চড়ে গুলশানের বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘মঈন খানকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি। আমরা তাকে থামিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমরাও তাকে কালো পতাকা মিছিলে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছি।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মির্জা সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কোনো অনুমতি ছাড়া কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল দলটি।’
তিনি বলেন, বিএনপি কর্মসূচি পালনের জন্য ডিএমপির কাছে অনুমতি চেয়েছিল কিন্তু নগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দলটিকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। ‘এ কারণে আমরা তাদের কর্মসূচি পালন করতে দেইনি।’
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে ৮ থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় বিএনপির মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে এবং কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর মতিঝিলের পীরজঙ্গি মাজারে গেলেও মিছিল বের করতে পারেননি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ করা রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার।
তিনি বলেন, ‘রাজধানীর ৭টি স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আমরা ডিএমপির পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ সব জায়গায় আমাদের বাধা দিয়েছে। আমরা পুলিশের এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে এবং কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পুলিশের উপস্থিতির মধ্যে কর্মসূচি পালনের জন্য নেতাকর্মীরা মিছিলস্থলের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করছেন। ‘কিন্তু পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও সংঘাতে জড়ানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’
একপর্যায়ে দলের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যাওয়ায় গয়েশ্বর নিজের গাড়িতে করে এলাকা ত্যাগ করেন।
মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিএনপি কর্মসূচি পালনের অনুমতি পায়নি।’
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম