অনলাইন ডেস্ক :
রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর এলাকায় গত রোববার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় ভাঙন। পানিতে টইটম্বুর নদীতে ভাঙন দেখা দেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিচ থেকে মাটি সরে গেলে বোঝার উপায় না থাকায় অনেকটাই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। ভাঙন এলাকায় শতাধিক পরিবার ও চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চরম ঝুঁকির মুখে রয়েছে। গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, শহরের ধুঞ্চি গোদারবাজার থেকে কিছুটা দূরে সিলিমপুর গ্রাম। নদীতে পানি বাড়ায় গ্রামটি এখন পানিবন্দি। যেতে হয় সাঁকো পাড়ি দিয়ে। নদীতীর সংরক্ষণ এলাকার একটি স্থানে ব্লকগুলো সরে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে পানির মধ্যে কিছু বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙন স্থান বোঝানোর জন্য একটি বাঁশ পুঁতে দেওয়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা আবু বক্কর জানান, রোববার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ দেখতে পান একটি জায়গায় পানি বুঁদবুঁদ করছে। ব্লকগুলো দেবে যাচ্ছে। তখন প্রায় ২০ হাত লম্বা একটি বাঁশ পানিতে ফেলে দেখেন পুরো বাঁশটিই ডুবে যাচ্ছে। নিচে মাটি পাচ্ছে না। আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য কয়েকজন যুবককে পানিতে নামান। তারা জানায় নিচে কোনো ব্লক নেই। শুধু মাটি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে তারা এসে দেখেন ব্লক ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে। ভাঙন প্রতিরোধের জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে ৩টি নৌকায় করে আনা বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরও বালুর বস্তা ফেলার কথা বলেছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্তও আসেনি। নদী তীরবর্তী প্রায় একশটি পরিবার এখন খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছে। তাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে হবে সে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নদীতে পানি বাড়ার ফলে এক মাস ধরে পানিবন্দি আছেন তারা। আরও তিন মাস এভাবেই যাবে। পানি থাকা অবস্থায় নদী ভাঙলে বোঝার উপায় নেই। কখন যেন ঘরবাড়ি ভেঙে যায় সেটাই সব থেকে বড় দুশ্চিন্তা। মিজানপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আকবর হোসেন ওই এলাকার বাসিন্দা। তিনি জানান, গত সাত দিন ধরে নদীতে পানি বাড়ছে। তারপর এই ভাঙন। তারা খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। তিনি ভাঙন প্রতিরোধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি আবেদন জানান। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। ১৫ মিটার এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মা তীর সংরক্ষণের ওই অংশটুকুর কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড। তারা খুলনা শিপইয়ার্ডকে দিয়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ভাঙন প্রতিরোধের জন্য যতগুলো ব্যাগ দরকার ততগুলোই ফেলা হবে বলে জানান তিনি। ইতোমধ্যে পদ্মা তীর সংরক্ষণ কাজে ছয় দফা ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সপ্তম দফা ভাঙনের সৃষ্টি হলো। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কাজটি এখনও চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি