November 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, September 11th, 2022, 7:42 pm

রানীর বিপুল সম্পদের কী হবে

অনলাইন ডেস্ক :

ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সম্পত্তি নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ সব সময়ের। তাঁর মৃত্যুর আগেও রানী এবং রাজপরিবারের সম্পদ ও সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে নানারকম কথা প্রচলিত ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর বেশ ভালোভাবেই সেই আলোচনা ডালপালা গজিয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যবসাভিত্তিক ম্যাগাজিন ফরচুন রানীর মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ হিসাব করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেটিতে বলা হয়েছে, রানীর ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা)। ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে সিংহাসনে থাকার সময়ে এই পরিমাণ সম্পত্তি অর্জন করেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে প্রিন্স চার্লস রাজার আসনে বসার সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল এ সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবেন। এ ছাড়া ব্রিটিশ রাজপরিবারের রয়েছে ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পারিবারিক ব্যবসা, যাকে রয়্যাল ফার্ম বলা হয়। রানী এলিজাবেথ বিনিয়োগ, শিল্প সংগ্রহ, গহনা ও রিয়েল এস্টেট থেকে এ বিপুল পরিমাণ সম্পদ আয় করেছেন। এ ছাড়া মায়ের কাছ থেকে পাওয়া ৭০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পারিবারিক সম্পত্তিও রয়েছে এর মধ্যে। সম্পত্তি ছাড়াও ছিল দামি পেইন্টিং, গহনা, স্ট্যাম্প সংগ্রহ, ঘোড়া ইত্যাদি। এ ছাড়া প্রতিবছর রাষ্ট্রীয় করদাতাদের তহবিল থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেতেন তিনি। এই অর্থ তাঁকে সার্বভৌম অনুদান আকারে দিয়ে থাকে ব্রিটিশ সরকার। ২০২১-২২ সালে রানীর জন্য সার্বভৌম অনুদানের পরিমাণ ছিল ৮৬ মিলিয়ন পাউন্ড। রানীর প্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেসের রক্ষণাবেক্ষণ এবং সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এ টাকা দেওয়া হয়। অবশ্য, এই অনুদান দেওয়ার পেছনেও কারণ রয়েছে। অষ্টাদশ শতকে রাজা তৃতীয় জর্জ ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী রাজা জর্জ তাঁর সব সম্পত্তি পার্লামেন্টকে দিয়ে দেন। এর বদলে ব্রিটিশ সরকার প্রতিবছর রাজপরিবারকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেয়। সেটিকেই ‘সার্বভৌম অনুদান’ বলা হয়। রাজপরিবারের এস্টেটের লাভের ওপর ভিত্তি করেই সার্বভৌম অনুদানের এই অর্থ সরকার রানীকে দিয়ে থাকে। এটি আসলে এক ধরনের সম্পত্তি ব্যবসা। এসবের মধ্যে রয়েছে শপিংয়ের জন্য বিখ্যাত রিজেন্ট স্ট্রিট ও বার্কশায়ারের এসকট রেসকোর্স। রানীর আয়ের আরও বেশ কিছু উৎস রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে রাজপরিবারের বাণিজ্যিক, কৃষিজাত ও আবাসিক সম্পত্তি- দ্য ড্যাচি অব ল্যাঙ্কেস্টার। এটি উত্তরাধিকার সূত্রে রাজা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর বড় মেয়ে হিসেবে পেয়েছেন তিনি। দ্য ড্যাচি অব ল্যাঙ্কেস্টারের অধীনে রানীর আছে ১৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমি। এসব জমির বেশিরভাগই সেন্ট্রাল লন্ডন, ল্যাঙ্কাশায়ার ও ইয়র্কশায়ারের মতো অভিজাত এলাকায়। এসব সম্পত্তি থেকে প্রতিবছর প্রায় দুই কোটি পাউন্ড আয় হয়। এ ছাড়া ইংল্যান্ডের বাইরে স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দান আয়ারল্যান্ডেও রানীর অনেক সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদ, যেখানে রানী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এটি রানীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি। এখন এসব সম্পত্তির মালিক হবেন প্রিন্স চার্লস। রাজপরিবারের মালিকানাধীন রয়্যাল ফার্ম মনার্ক পিএলসি নামেও পরিচিত। রানী এলিজাবেথের নেতৃত্বে ফার্মের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন চার্লস ও তাঁর স্ত্রী ক্যামিলা, প্রিন্স উইলিয়াম ও তাঁর স্ত্রী কেট মিডলটন, প্রিন্সেস অ্যান, প্রিন্স অ্যাডওয়ার্ড ও তাঁর স্ত্রী সোফি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এই ফার্ম থেকে প্রতিবছর যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বিপুল অর্থ যোগ হয়। তবে রানীর যেমন আয়, তেমন খরচও রয়েছে। অফিসিয়াল ভ্রমণ, সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিবারের পরিচালনার জন্য আয়ের বেশিরভাগ অর্থই খরচ হয়ে যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন অভ্যর্থনা ও গার্ডেন পার্টিতে খরচ হয় কিছু অর্থ। গত বছর রানীর পৃষ্ঠপোষকতায় ২ হাজার ৩০০টি রাজকীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তহবিলের বেশিরভাগ অর্থ খরচ করা হয় রানীর নিরাপত্তা, রাজপ্রাসাদ রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মীদের বেতনের জন্য। ধারণা করা হয়, নিরাপত্তা খরচসহ রাজপরিবারের মোট বার্ষিক খরচ প্রায় ৩৪ কোটি পাউন্ড।