সিনহুয়া, জেরুজালেম :
ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন (হামাস) সোমবার গাজায় জিম্মি থাকা দুই বয়স্ক ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে।
সোমবার সর্বশেষ দুই ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির পর রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় মানবিক সহায়তার তৃতীয় চালান ঢুকেছে।
অন্যদিকে, মানবিক সহায়তা বহনকারী আরও বেশ কয়েকটি বিমান মিশরের উত্তর সিনাইয়ের আল-আরিশ বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পাঠানোর অপেক্ষা করছে।
এছাড়া, গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা এবং ফিলিস্তিনে সম্ভাব্য স্থল আক্রমণের প্রস্তুতি অব্যাহত থাকায়, লেবাননের শিয়া সামরিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল সীমান্তে আরও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। যা বিরোধের আঞ্চলিক বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘মিশর-কাতারের মধ্যস্থতার’ মাধ্যমে ‘মানবিক কারণে’ আরও দুই জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।
৭ অক্টোবর আটক করার পর গত শুক্রবার দুই আমেরিকান জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। এবার দ্বিতীয়বারের মতো হামাস দুই ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে।
একজন ইসরায়েলি সরকারি কর্মকর্তা গাজা ও মিশরের মধ্যবর্তী রাফাহ ক্রসিংয়ে এসে পৌঁছানো দুই ইসরায়েলির মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, একটি ইসরায়েলি দল তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ দেখা করতে যাচ্ছিল।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কান টিভির খবরে ওই দুই নারীকে ইয়োচেভেড লিফশিটজ (৮৫) এবং নুরিট কুপার (৭৯) হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ইয়োচেভের স্বামী ৮৩ বছর বয়সী সাংবাদিক ওডেদ লিফশিটজকে তার স্ত্রীর সঙ্গে অপহরণ করা হয়েছিল এবং তিনি এখনও হামাসের হাতে বন্দী রয়েছেন।
এর আগে সোমবার ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো বলেছিল যে হামাস গাজায় বন্দী কিছু বিদেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ‘কাতার, মিশর ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার জেরে।’
সাংবাদিকদের একটি ব্রিফিংয়ে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, সামরিক বাহিনী ‘সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অপারেশনাল পরিকল্পনা এবং গোয়েন্দা প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে জড়িত’ থাকার কথা বলেছেন। যদিও হামাসের জিম্মি-মুক্তির খবর নিশ্চিত বা অস্বীকার করেনি।
হাগারি নিশ্চিত করেছেন, গাজায় জিম্মির সংখ্যা এখন ২২২ এ দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে ইসরায়েলি, বিদেশি নাগরিক, নারী, শিশু ও বয়স্করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করেছে
সোমবার সর্বশেষ দুই ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির পর রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় মানবিক সহায়তার তৃতীয় চালান ঢুকেছে।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট নিশ্চিত করেছে, তারা খাদ্য, পানি, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীসহ মানবিক সহায়তা বহনকারী ২০টি ট্রাকের তৃতীয় চালান পেয়েছে।
ইতোমধ্যে গাজা স্ট্রিপের জন্য মানবিক সহায়তা বহনকারী আলজেরিয়া, কুয়েত, ইরাক, তুর্কিয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিমানগুলো মিশরের আল-আরিশ বিমানবন্দরে পৌঁছেছে, যা রাফাহ ক্রসিং থেকে ৫০ কিলোমিটারেরও কম দূরে।
তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেটিন কোকা সোমবার বলেছেন, তুর্কিয়ে গাজা স্ট্রিপের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সরবরাহ বহনকারী দুটি কার্গো বিমান মিশরে পাঠিয়েছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ আরও দুটি বিমান পাঠানো হবে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ তিনি বলেছেন, বিমানটিতে ২০ জন ডাক্তারের একটি মেডিকেল টিমও ছিল।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২