নিজাম উদ্দিন লাভলু, রামগড় :
খাগড়াছড়ির রামগড়ের ১০টি দুর্গম পাহাড়ি পল্লীর সুবিধা বঞ্চিত যে বাঙ্গালি ও পাহাড়ি পরিবারগুলো এতদিন সূর্যাস্তের সাথে সাথে রাতের আধাঁরে ডুবে থাকতো, এখন তাদের ঘরেও জ্বলবে বাতির আলো, সেই আলোয় ছেলে মেয়েরা লেখাপড়াও করতে পারবে। এতদিন যেটি তাদের কাছে স্বপ্নের মত ছিল, এখন এ সুবিধা হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তারা। বিদ্যুৎ বিহীন ঐসব দুর্গম পাহাড়ি পল্লীর ৭০১টি বাঙ্গালি ও ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি পরিবারকে দেয়া হল প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের উপহারের ৭০১ সোলার প্যানেল। একই সাথে প্রতিটি পরিবারকে ১০০ ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এ সোলার হোম সিস্টেমের মালামাল পরিবহণ খরচ হিসেবে দেয়া হয় ৬৫০ টাকা।
বুধবার(২ নভেম্বর) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে আনু্ষ্ঠানিকভাবে নিজ হাতে বিতরণ করেন এসব সোলার হোম সিস্টেম। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিতকরণ কর্মসূচির আওতায় বিদ্যুৎবিহীন দুর্গম পল্লীর বাসিন্দাদের এ সোলার দেয়া হচ্ছে। ১০০ ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এ সোলারের সাহায্যে বাতির আলো ছাড়াও ফ্যান চালানো ও মোবাইল ফোন চার্জ ইত্যাদি সুবিধাও ভোগ করা যাবে। তিনি বলেন, দুর্গম এলাকার বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন পাহাড়ি পল্লী, যেখানে সহজে বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণ সম্ভব নয ঐসব পাহাড়ের বাসিন্দাদের সোলারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ঘরে বিদ্যুতের এ ঘোষণার বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সোলার হোম সিস্টেম বিতরণে আর্থিক লেন-দেনসহ কোন প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।
পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী নুরুল আলমের সভাপতিত্বে বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য ( বাস্তবায়ন) ও সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: হারুণ অর রশিদ রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি, উপজেলা নির্বাহি অফিসার(ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত, রামগড় পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম কামাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের খাগড়াছড়ির নির্বাহি প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: মোস্তফা হোসেন।
পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী নুরুল আলম জানান, পাতাছড়া ইউনিয়নের
বিদ্যুৎবিহীন ৭ নং ওয়ার্ডের র্দুগম প্রত্যন্ত গ্রাম বেলছড়ি, গুজাপাড়া, কংপ্রু পাড়া, নোয়া পাড়া, সালদা পাড়া, ৮ নং ওয়ার্ডের মরা কয়লা, গৈয়াপাড়া, দক্ষিণ বালুখালি ও ৯ নং ওয়ার্ডের বালুখালি ও সোনারখীল গ্রামের ৭০১টি পরিবারের মাঝে এ সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ করা হয়। তিনি জানান, এ ১০টি গ্রাম উপজেলা সদর হতে ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে অত্যন্ত র্দুগম এলাকায় অবস্থিত।
রামগড় উপজেলা নির্বাহি অফিসার(ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত বলেন, বিদ্যুৎবিহীন দুর্গম পাহাড়ি এলাকার প্রতিটি পরিবারকে পর্যায়ক্রমে এ সোলার হোম সিস্টেম দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি