অনলাইন ডেস্ক :
কম্বোডিয়ার সুপরিচিত সরকারবিরোধী নেতা কেম সখাকে রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে ২৭ বছর গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। শুক্রবার (৩রা মার্চ) রাজধানী নম পেনের আদালতে দেওয়া রায়ে বিচারক কয় সাও বলেছেন, এই দন্ডের কারণে ৬৯ বছর বয়সী কেম সখা সরকারি কোনো পদে থাকতে পারবেন না, পারবেন না নির্বাচন করতেও। প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সরকারকে উৎখাতে বিদেশি শক্তির সঙ্গে চক্রান্ত করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে এই দন্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। বিশ্বে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে দেশ শাসন করে আসা ব্যক্তিদের তালিকায় উপরের দিকেই আছেন হুন সেন, তিনি ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন। দেশটিতে এই বছরের জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা, এতেও হুন সেন লড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেকে আবার বলছেন, প্রায় চার দশকের শাসনের অবসান ঘটিয়ে হুন সেন এবার তার বড় ছেলে হুন মানেতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন। ২০১৩ সালের এক ভিডিওতে কেম সখা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সমর্থন পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন, ওই ভিডিওর ওপর ভিত্তি করেই ২০১৭ সালে তাকে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়। সখা ও তার আইনজীবীরা অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বিরোধীদলীয় এ নেতার বিরুদ্ধে করা মামলাকে ভিত্তিহীন বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। শুক্রবার (৩রা মার্চ) রায়ের পর সোখার আইনজীবী আং উদম বলেছেন, তার দল এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও পশ্চিমা সরকারগুলো আগেই কেম সখার বিরুদ্ধে করা মামলাকে ‘ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করে এসেছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কম্বোডিয়া এ সুপরিচিত বিরোধীদলীয় নেতার দন্ড প্রত্যাহার করে তাকে ‘অবিলম্বে শর্তহীন মুক্তি’ দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে। অনেকেই কম্বোডিয়ার আদালতকে হুন সেনের সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দেখেন, যে কারণে কম সোখার রায় এমন হবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল, লিখেছে বিবিসি। গত মাসেই হুন সেন তার ছেলেকে আক্রমণ এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করা একটি নিবন্ধ প্রকাশের জন্য কম্বোডিয়ায় টিকে থাকা শেষ স্বতন্ত্র গণমাধ্যমগুলোর একটি ভয়েস অব ডেমোক্রেসি বন্ধ করে দিয়েছেন। কেম সখা কম্বোডিয়ান ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন। আগের নির্বাচনগুলোতে দলটির জনপ্রিয়তা বাড়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। একপর্যায়ে সখার রেসকিউ পার্টির জনপ্রিয়তা হুন সেন ও তার দলকে ক্ষমতা থেকে ফেলে দিতে পারে এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল বলেও অনেকে মনে করেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে রেসকিউ পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়; এরপর দলটির অধিকাংশ নেতা হয় বিচারের মুখোমুখি হন, না হয় দেশ ছেড়ে পালান।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু