অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকাই সিনেমার ‘মিয়া ভাই’ খ্যাত অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। সোমবার (১৫ মে) সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আকবর হোসেন পাঠান ফারুক আট বছর ধরে এই মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ সর্বশেষ ২০২১ সালে মার্চে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। ওই সময় পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে ভর্তির কয়েক দিন পর তার মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু সোমবার (১৫ মে) সিঙ্গাপুর স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সিঙ্গাপুর থেকে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পৌঁছাবে ঢাকাই সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মরদেহ। জানাজার নামাজের বিষয়ে এখনও পারিবারিক কোনো সিন্ধান্ত হয়নি।
একাধিক আনুষ্ঠিকতা শেষে গাজীপুরের তুমালিয়া ইউনিয়নে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বাবাকে। ফারুকের মেয়ে ফারিয়া তাবাসসুম পাঠান তুলসী এই তথ্য জানিয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিয়াভাই’ খ্যাত বর্ষীয়ান চিত্রনায়ক, সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান। নাম আকবর হোসেন পাঠান হলেও সবার কাছে অধিক পরিচিত ফারুক নামে। বর্ণাঢ্য জীবনে চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতির পাশাপাশি নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে যুক্ত ছিলেন ফারুক। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার।
সফল এই অভিনেতা লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাইয়ের মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৭১ সালে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সিনেমা জগতে প্রবেশ তার, যেখানে সহশিল্পী ছিলেন কবরী। ফারুক অভিনীত সিনেমার মধ্যে রয়েছে: খান আতাউর রহমান পরিচালিত আবার তোরা মানুষ হ (১৯৭৩), নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত আলোর মিছিল (১৯৭৪), প্রমোদ কর পরিচালিত সুজন সখী (১৯৭৫), নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত লাঠিয়াল (১৯৭৫), আবদুস সামাদ পরিচালিত সূর্যগ্রহণ (১৯৭৬), আমজাদ হোসেন পরিচালিত নয়নমনি (১৯৭৬), তাহের চৌধুরী পরিচালিত মাটির মায়া (১৯৭৬), আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত সারেং বৌ (১৯৭৬), আমজাদ হোসেন পরিচালিত গোলাপী এখন ট্রেনে। এছাড়া নাগরদোলা, সূর্য সংগ্রাম, দিন যায় কথা থাকে, কথা দিলাম, সাহেব, মাটির পুতুল, ছোট মা, ঘরজামাই, এতিম, তৃষ্ণা, শক্তিশালী, সিকান্দার, শেষ পরিচয়, কালা খুন, যাদু মহল, দুরন্ত দুর্বার, চেনা মুখ, আশা, জীবন মানে যুদ্ধ, চোখের মনি, যৌতুক, মাসুম, শহর থেকে দূরে, মেহমান, প্রিয় বান্ধবী, দোস্তী, জীবন মৃত্যু, প্রতিজ্ঞা, পুনর্মিলন, অন্ধ বধ, সখি তুমি কার, ছক্কা পাঞ্জা, জনতা এক্সপ্রেস, লাল কাজল, যন্তর মন্তর, আরশিনগর, হাসু আমার হাসু, মায়ের আঁচল, জীবন নিয়ে যুদ্ধ, মান অভিমান, ঝিনুক মালা, শিমুল পারুল, মিয়া ভাই, ভুল বিচার, দাঙ্গা ফ্যাসাদ, পালকি, লাখে একটা, ভাই ভাই, পদ্মা মেঘনা যমুনা, দুখিনী মা। জীবন সংসার, এখনো অনেক রাত, কোটি টাকার কাবিন এবং ঘরের লক্ষ্মী সিনেমায় অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান চিত্রনায়ক ফারুক।
প্রসঙ্গত, লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন তিনি। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ