March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, November 4th, 2021, 8:49 pm

রেমিট্যান্সের জাদু নিঃশেষ প্রায়, মূল্যস্ফীতিতে ধুঁকছে দেশ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা মহামারিতে সৃষ্টি হয়েছে নানামুখী সংকট। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশে বেশির ভাগ মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে, কারো কারো বন্ধই হয়ে গেছে। করোনার পর জীবনযাত্রায় কিছুটা স্বাভাবিকতা ফিরলেও দেশে আয় যেভাবে বাড়ছে, তার তুলনায় ব্যয় বাড়ছে তীব্রগতিতে। বিশেষ করে নিত্যপণ্য ও সেবার মূল্য বেড়েছে। ফলে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এদিকে দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করলে স্থানীয়ভাবে সব ধরনের সেবা ও পণ্যের মূল্য বাড়বে। এতে জীবনযাত্রার ব্যয়ের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়বে মূল্যস্ফীতির হার। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। করোনার ক্ষতির পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমও হবে বাধাগ্রস্ত। অপর দিকে দাম না বাড়ালে আর্থিকভাবে প্রচন্ড চাপে পড়বে সরকার। বেশি দামে কিনে কমে বিক্রি করলে মোটা অর্থ ভর্তুকি দিতে হবে। এতে সরকারের ঋণ বাড়বে।
কয়েকমাস থেকে শাকসবজি থেকে শুরু করে সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম লাগামহীন। একইভাবে বাড়ি ভাড়া, জ্বালানি ব্যয় বেড়েছে। সন্তানের লেখাপড়ার খরচ ও চিকিৎসা ব্যয়ও বেড়েছে। কিন্তু ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয় বাড়ছে না। বরং অনেকে মহামারি করোনায় চাকরি হারিয়েছেন। ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান কমছে। অনেককে সঞ্চয় ভেঙে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। এমনিতেই করোনা সংক্রমণে প্রায় দুই বছর ধরে বাধাগ্রস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে থেকে সামগ্রিক কার্যক্রম। মানুষের আয় না বাড়লেও পণ্যমূল্যের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফিতি দেখা দিয়েছে। অর্থনীতিতে জোগানের তুলনায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণত মূল্যস্ফীতি হয়ে থাকে। বিশেষ করে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, পণ্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বেড়ে যাওয়ার ফলে মুল্যস্ফীতি দেখা যায়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ার ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। আর সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়াই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণ।
অর্থনীতিবিদদের মতে, সামনে দাম কমার লক্ষণ নেই। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন এবং চাপে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। শুধু নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিই নয়; করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমদানি-রফতানি উভয় খাতেই পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়েছে। আবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ক্ষতি পোষাতে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যে মনযোগ দিয়েছে। পণ্য আমাদানি বেড়েছে। এলসি খোলার হিড়িক পড়েছে। একই সঙ্গে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম সর্বোচ্চে উঠেছে।জ্বালানি পণ্যটির বাজার অস্থিতিশীল। এ ছাড়া বেড়েই চলেছে ডলারের দাম। এতে প্রতিদিনই মান হারাচ্ছে টাকা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, জিনিসপত্রের দাম কমার তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং তা আরও বাড়তে পারে। কারণ বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়লে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে নিত্যপণ্যের ওপর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনার প্রভাব কমে যাওয়ায় হঠাৎ করেই সবকিছুর চাহিদা বেড়েছে। জ্বালানি তেলেরও চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। এতে দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম বাড়ানো হলে বাজারে এর তীব্র নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সবকিছুর দাম বেড়ে যাবে। করোনার কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। সেটা এখনো আগের অবস্থায় যায়নি। এ অবস্থায় সরকারের নীতির কারণে পণ্যমূল্য বাড়লে ভোক্তাদের জন্য তা অসহনীয় হয়ে উঠবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সমুদ্র, আকাশ ও সড়কপথে যথাক্রমে জাহাজ, উড়োজাহাজ ও ট্রাক-টেলরের ভাড়া এবং কনটেইনার, স্ক্যানার, হ্যান্ডলিংসহ বন্দরের আনুষঙ্গিক চার্জসহ সার্বিকভাবে পরিবহন খরচ আগের চেয়ে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে রফতানিমুখী ব্যবসায়ীদের মুনাফায় টান পড়েছে। দেশের ভেতরে সড়কপথেও ভাড়া বেড়েছে।
বিশ্বব্যাপী চলা করোনা মহামারির মধ্যে দেশগুলোর অর্থনীতি তীব্র চাপের মধ্যে পড়েছে। উৎপাদন কমে যাওয়াসহ নানা উপসর্গে ভুগছে বিশ্ব অর্থনীতি। তবে এশিয়া থেকে আমেরিকা এমনকি ইউরোপের দেশগুলো এখন ধুঁকছে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। মূলত: বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যসহ নানা ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে কমপক্ষে আট ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে সরবরাহ চেইনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে বেড়ে যেতে পারে বিভিন্ন পণ্যের দাম। ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। আর টাকার প্রবাহ ও পণ্যের দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে। এ ছাড়া কমতে পারে আমদানি, রফতানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধির হার।
ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ ক্রমবর্ধমান পণ্য ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হচ্ছে। বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। যা স্বল্প আয়ের লোকদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। করোনার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় মানুষের চলাচল কমেছে। এতে তাদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে। কমেছে আয়। ক্রয়ক্ষমতা কমায় উৎপাদিত পণ্যও কিনেছে কম। সব মিলে এ চক্রে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা চাহিদা অনুযায়ী টাকার প্রবাহ বাড়াবে। এদিকে সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই সরকার উভয় সঙ্কটে পড়েছে।
এদিকে বিগত দেড় বছরেরও কম সময়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম সর্বোচ্চে পর্যায়ে উঠেছে। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই জ্বালানি পণ্যটির বাজার অস্থিতিশীল। বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে বর্তমানে বাজারের অস্থিতিশীলতা চরম আকার ধারণ করেছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় বাড়ছে না পণ্যটি উৎপাদন ও সরবরাহ। চলতি বছর ইউরোপের বাজারে জ্বালানি পণ্যটির মূল্য ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। এলএনজি আমদানির ৯৪ ভাগই এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোতে যায়। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত গ্যাসের এক-তৃতীয়াংশই ব্যবহার করে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোতে। তবে বর্তমানে এসব দেশে এলএনজির মজুদ বেশ কম। গ্যাস ক্রয় করতে ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছে।
এছাড়া বেড়েই চলছে ডলারের দাম। এতে প্রতিদিনই মান হারাচ্ছে টাকা। বর্তমানে খোলাবাজারে ডলারের দাম ৮৯ টাকার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করা হলেও দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি আয়ে ধীরগতি ও রেমিট্যান্সপ্রবাহের নিম্নমুখিতার মধ্যে আমদানিতে গতি আসায় অনেক ব্যাংকে দেখা দিয়েছে ডলারের সঙ্কট। তাই ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে ডলারের দাম।
এ বিষয়ে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরমের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, করোনার কারণে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে মাত্র ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ছোট ও মাঝারি শিল্প খাত ভালো নেই। আয় ও মজুরি কমায় মানুষের ভোগ কমেছে। খাদ্যব্যয় কমিয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ। ফলে পিছিয়ে পড়াদের সঙ্গে আরও মানুষ যুক্ত হওয়ার চাপ বাড়ছে। এ ছাড়া রেমিট্যান্সের ঊর্ধ্বগতিতে এক ধরনের ভাঙ্গন ধরেছে। আর উৎপাদন ব্যয়-মূল্যস্ফীতি বাড়ায়, চাপে পড়বে নিম্ন মধ্যবিত্ত।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, রেমিট্যান্সের জাদু শেষ হতে চলেছে। বিদেশে মানুষ কম গেছে, রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। এ কারনে, কর্মসংস্থান ও ভোগের ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ড. দেবপ্রিয় বলেন, পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য আর্থিক ও খাদ্য সহায়তায় বরাদ্দ কম। এই বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক রাখতে পিছিয়ে পড়াদের গণটিকা কর্মসূচির আওতায় আনতে বেসরকারি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।
সূত্র মতে, দেশে গত সেপ্টেম্বরে টানা তৃতীয় মাসের মতো মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। যদিও অক্টোবরের হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ফলে খাদ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বাড়ছে এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ দশমিক ৫৯ হয়েছে, যেটি আগস্টে ৫ দশমিক ৫৪ ছিল।
চাহিদা পুনরুদ্ধার, নজিরবিহীন শিপিং চার্জ এবং সরবরাহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে বৈশ্বিক বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে এবং বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। খাদ্য নয়, এমন পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার সেপ্টেম্বরে ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ দশমিক ১৯ হয়েছে। আগস্টে এটি ৬ দশমিক ১৩ ছিল। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ দশমিক ২১ হয়েছে, যেটি আগস্টে ৫ দশমিক ১৬ ছিলো।
বিবিএস একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, চাল, ডিম, গম, রসুন, পিঁয়াজ, আদা ও হলুদের দাম গত মাসে বেড়েছে। যদিও শুধু বাড়েনি। অনেক পণ্যের দাম কয়েকগুন বেড়েছে।
গ্রামীণ অঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আগস্টের ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে। একইভাবে, খাদ্য নয়- এমন পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ হয়েছে।
তবে শহরাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি কিছুটা ভালো। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আগস্টের ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে। শহরাঞ্চলে খাদ্য নয়, এমন পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার আগস্টের ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ হয়েছে।
এমনকি বাজারে পেঁয়াজ ও চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনির নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির পর এ শুল্ক কমান হলো।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদেরকে মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে হবে। কারণ এটি ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবং তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রিত মূল্য এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি জানান, সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এবং সম্ভবত বাংলাদেশ একই ধারায় যুক্ত হয়েছে। সেপ্টেম্বরে সকল ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, তবে খুব বেশি পরিমাণে নয়, যোগ করেন তিনি।
উচ্চ মাত্রার মূল্যস্ফীতি সরাসরি নিম্ন আয়ের মানুষদের প্রভাবিত করবে। ইতোমধ্যেই তারা মহামারির শুরু থেকে আয় কমে যাওয়া নিয়ে সমস্যায় আছেন। গত অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ৫ দশমিক ৫ শতাংশের চেয়ে সামান্য পরিমাণে বেশি, ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হারে স্থিতিশীল ছিলো।
চাহিদা ও খরচ উভয়ের কারণে মূলত পণ্যের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক এই শীর্ষ অর্থনীতিবীদ জানান,গত দেড় বছরে মহামারির কারণে কেউই টাকা খরচ করছিলেন না। এখন অর্থনীতি আবার খুলেছে, মানুষ খরচ করছে এবং বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করছে। ফলে সার্বিক চাহিদা বাড়ছে। ইতোমধ্যে চাপে থাকা সাপ্লাই চেইন সারা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় মূল্যের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ড. জাহিদ হোসেনের মতে, এর সঙ্গে বিনিময় মূল্য কমে যাওয়া যুক্ত হয়ে সমস্যা আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, এর সঙ্গে বড় ব্যবসায়ীদের কারসাজির বিষয়টি যোগ করলে আপনি আগামী মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাবেন।