কৃষক আব্দুল কাদেরের বাড়িতে তার এক বন্ধু বেড়াতে এলে সঙ্গে নিয়ে আসেন আনারকলি জাতের আনারস। সুমিষ্ট সেই আনারস খেয়ে স্বপ্ন দেখেন এর জাত বাড়ানোর। বাড়ির পাশে এর কাণ্ডও রোপণ করেন। পরে ওই গাছে ফল দেখে অবাক কাদের চিন্তা করেন এ আনারসের বাণিজ্যিক চাষাবাদের।
তবে বিপত্তি বাঁধে উপযুক্ত জমি নিয়ে। পানি জমে না এমন ঢালু ও উঁচু জমি আনারস চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কিন্তু লালমনিরহাটের জমি সব সমতল হওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও আনারস চাষে লাভের সুযোগ খুবই কম।
তবে অদম্য কৃষক আব্দুল কাদের ২০০৮ সালে বাড়ির পাশে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেল লাইনের ঢালু জমিতেই পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেন তার স্বপ্নের আনারস। এতে সফলও হন তিনি।
কৃষক আব্দুল কাদের লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের লাল ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা।
তিনি বলেন, আনারকলি জাতের এ আনারস ভারতের শিলিগুরিতে তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজনের হয়। তবে তার বাগানে ফলেছে আড়াই থেকে তিন কেজি ওজন পর্যন্ত। ওজন কিছুটা কম হলেও স্বাদে কমতি নেই। এই জন্য এর চাহিদাও অনেক বেশি।
খেত থেকেই প্রতি পিস আনারস নগদে পাইকারি হারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ বছর প্রায় পাঁচ হাজার পিস আনারস বিক্রি করেছেন। এছাড়া বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দিয়েছেন বিনামূল্যে।
কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, আনারস এমন একটা ফসল যার চারা একবার লাগালেই চলে। প্রয়োজন শুধু পরিচর্যা করা। ফল বড় হলে তা সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে জাগ (ঝাউ জঙ্গল দিয়ে ঢেকে রাখা) দিয়ে রাখতে হয়। পরে পাকলেই তা বিক্রি করতে হয়। তাই উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে।
এই কৃষকের দাবি, আনারস চাষ রেললাইনের কোনো ক্ষতি করে না। বরং মাটির ক্ষয়রোধ করে। রেল কর্তৃপক্ষ অনুমতি আর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত পুরো রেললাইনে আনারসের বাগান করতে চান এই কৃষক। তাতে এক দিকে দেশের আনারসের চাহিদা মেটার পাশাপাশি রেললাইনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বীরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, কৃষক আব্দুল কাদের একজন সফল কৃষক। তার অনেক বাগান রয়েছে। নিজ উদ্যোগে আনারস বাগান করলেও মাঝে মধ্যে কৃষি বিভাগের পরামর্শ দেয়া হয়।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি