নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রথমবারের মতো দেশে রেল এ্যাম্বুলেন্স চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করবে স্কয়ার হাসপাতাল। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি মিটারগেজ কোচে ওই এ্যাম্বুলেন্স চালু করা হচ্ছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি আইসিইউ সুবিধা থাকবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেলওয়ে এ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে তা সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে আরো রেল এ্যাম্বুলেন্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রামের পাহাড়তলিতে রেলওয়ের কারখানায় একটি এয়ারব্রেক সংবলিত কোচ নির্ধারণ করে মডিফিকেশন কার্যক্রম চলছে। তাতে ৩টি আইসিইউ, ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্ট ইউনিট, সংশ্লিষ্ট ইক্যুইপমেন্ট ইউনিট, চিকিৎসকদের চেম্বারসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা রাখা হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে বহরে প্রথমবারের মতো যুক্ত হওয়া এ্যাম্বুলেন্স পরিষেবায় একজন মুমূর্ষু রোগী একটি আইসিইউ এ্যাম্বুলেন্সে যেসব সুবিধা পায় তার সবই পাবে। এটি এয়ার এ্যাম্বুলেন্সের মতো অসুস্থ হওয়ার পর দ্রুত চিকিৎসার জন্য যেভাবে রোগীকে পরিবহন করা হয়, ঠিক সেভাবেই রেল এ্যাম্বুলেন্স ওই সেবা দেবে। এয়ার এ্যাম্বুলেন্সের মতো ননস্টপ ট্রেনে করে রোগী গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া যাবে। কোচটিতে বেড থাকবে, আইসিইউ থাকবে, চিকিৎসক থাকবে। যে কেউ রেল এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে পারবে।
সূত্র জানায়, রেলে বিশেষ ধরনের এ্যাম্বুলেন্সের নক্সা তৈরি এবং কোচ মডিফিকেশনের কাজ স্কয়ার হাসপাতাল ও বাংলাদেশ রেলওয়ের যৌথ উদ্যোগে হচ্ছে। চট্টগ্রামের পাহাড়তলিতে রেলওয়ে কারখানায় এয়ারব্রেক সংবলিত কোচে কাজ শুরু করেছে স্কয়ার হাসপাতাল। শিগগিরই স্কয়ারের সঙ্গে ওই উদ্যোগ বাস্তবায়নে চুক্তিবদ্ধ হবে রেলওয়ে।
সূত্র আরো জানায়, ১৮৬২ সালে এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেল যুক্ত হয়। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপনের মাধ্যমে রেলে যুক্ত হয় এ অঞ্চল। বর্তমানে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ মিলিয়ে ২ হাজার ৯৫৫ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে।
এদিকে রেল এ্যাম্বুলেন্স উদ্যোগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী জানান, বিশ্বের অনেক দেশেই এমন ব্যবস্থা রয়েছে। পাশের দেশ ভারতে মেডিক্যাল ট্রেন আছে, যেখানে অপারেশন থিয়েটারও রয়েছে। এবার বাংলাদেশ রেলওয়ে এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ একটি কোচেই হাসপাতাল কাম এ্যাম্বুলেন্স করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি সফল হলে রেল এ্যাম্বুলেন্স করা হবে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, বিমান, সড়ক এমনকি নৌপথেও এমন সুবিধা রয়েছে। কেবল রেলে ছিল না। এখন রেলে ওই ব্যবস্থা যোগ করা হচ্ছে। যেভাবে কোন মুমূর্ষু রোগীকে সড়ক কিংবা এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে করে সেবা দেয়া হয়, রেল সেভাবেই সেবা দেবে। প্রাথমিকভাবে একটা কোচে পরীক্ষামূলকভাবে করা হবে এবং সেটা চট্টগ্রামে করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম