April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, March 1st, 2023, 9:25 pm

রেল প্রকল্পে শম্ভুক গতি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শম্ভুক গতিতে চলছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রেল প্রকল্পগুলো। চলমান ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ৮টিই গতিহীন। আরো ৩টি প্রকল্পের মেয়াদ ফুরালেও কাজ শেষ হয়নি। তাছাড়া কয়েকটি প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশোধন করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সেগুলোও নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এমন পরিস্থিতি উত্তরণে রেলপথ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি প্রকল্পের পরিচালকদের (পিডি) বদলিরও সুপারিশ করেছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শম্ভুক গতিতে চলা রেলের প্রকল্পগুলো হলো ঠিকাদারের অর্থায়নে ৭০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন ক্রয়, ২০০টি মিটারগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ ক্রয়, ২১টি মিটারগেজ ডিজেল ইঞ্জিন মেরামত, কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশন পুনর্বাসন, আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ, আখাউড়া-লাকসাম রেলপথকে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে রূপান্তর, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে বিদ্যমান রেলপথের সমান্তরালে ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ। ওই ৮টি প্রকল্পে ১২ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। আর অগ্রগতি মাত্র ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ।
সূত্র জানায়, রেলের আখাউড়া-লাকসাম প্রকল্প ৯ বছরে ৮৮ শতাংশ এগিয়েছে। আর প্রকল্প মেয়াদ তৃতীয়বারের মতো বাড়িয়ে ২০২৪ সালে জুন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। ২০১১ সালের প্রকল্প ছিল ৭০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন ক্রয়। ২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার ওই প্রকল্প মাত্র আধা শতাংশ এগিয়েছে। আর প্রকল্পের বেতন-ভাতা বাবদ ৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ২০১৬ সালের প্রকল্প ২০০টি মিটারগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ ক্রয়। ৭ বছরে অগ্রগতি দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। আর ২০১৬ সালে অনুমোদিত ২১ ইঞ্জিন মেরামতের প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য। তাছাড়া ভারতীয় ঋণে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প ২০১১ সালের জুলাইয়ে সরকারের অনুমোদন পায়। ৬৭৮ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে ৫৫৬ কোটি টাকা ঋণ দেবে ভারত। গত জুলাই পর্যন্ত প্রকল্প অগ্রগতি ছিল ২৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। সাত মাস কাজ বন্ধ। ৫২ কিলোমিটার কুলাউড়া-শাহবাজপুর পুনর্বাসন কাজের ভারতীয় ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দিয়েও কাজ করাতে পারেনি রেল। আর ভারতীয় অনুদানে ৪৭৮ কোটি টাকায় আখাউড়া থেকে ১০ দশমিক ১ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সাত বছরে ৭০ শতাংশ এগিয়েছে। একইভাবে ১১ বছরে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণে কাজ ৬৭ শতাংশ এগিয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে বিদ্যমান রেলপথের সমান্তরালে ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। কাজ এগিয়েছে ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর ভারতীয় ঋণে ১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকায় পাবর্তীপুর-কাউনিয়া পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণ কাজ গত ডিসেম্বরে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা ছিল। তবে ৫ বছরে কাজই শুরু হয়নি প্রকল্পের অগ্রগতি দশমিক শূন্য শূন্য চার শতাংশ। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা। তবে এখনও নির্মাণকাজ শুরুই হয়নি। ৫ বছরে অগ্রগতি সাড়ে ৬ শতাংশ। সমীক্ষা ও নকশার কাজই চলছে।
সূত্র আরো জানায়, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছরের ডিসেম্বরে চালু হবে। কিন্তু এখনো কাজই শুরু হয়নি। চার বছরে অগ্রগতি পৌনে ৭ শতাংশ। আর বগুড়া-সিরাজগঞ্জ এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী প্রকল্প আগামী ৫ বছরেও বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই।