আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চিফ প্রসিকিউটর করিম খান রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচারের প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি ও ন্যায়বিচার প্রদানের মধ্যে ব্যবধান রয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর করিম খান রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কথিত গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে সাক্ষ্য নিতে কক্সবাজার পরিদর্শন করেছেন।
কারা দায়ী তা খুঁজে বের করতে তিনি পরের বছর আবার আসবেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গাদের প্রতি অঙ্গীকার দিয়েছি।’
আইসিসির প্রসিকিউটর বলেছেন যে তিনি মামলার জন্য সম্পদ বাড়াতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।
কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনকালে করিম খান রোহিঙ্গা যুব গোষ্ঠীর সঙ্গে আইসিসির কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন এবং তরুণরা কীভাবে ন্যায়বিচার প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে পারে তা বিবেচনা করেন।
তিনি বলেন, জবাবদিহিতার প্রক্রিয়ায় মূল্যবান অংশীদার হিসেবে শিশু ও তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য।
কুতুপালং ক্যাম্পে প্রথম বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গা নারী গোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি রিপোর্টিং পদ্ধতিতে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি, আইসিসির কাজ সম্পর্কে বোঝাপড়া গভীর করা এবং স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে ফলাফল প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরেন।
মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার আবাসস্থল কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প।
প্রসিকিউটর খান তার সফরের উদ্দেশ্য এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে তাদের চলমান কাজ ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ন্যায়ের পতাকা ধরে রেখেছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার উদারতায় ধন্যবাদ জানান তিনি।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব মামলা নিষ্পত্তির জন্য আইসিসির প্রচেষ্টা কামনা করেন।
মঙ্গলবার আইসিসির প্রসিকিউটরকে তিনি বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলাটি শেষ করার জন্য আপনার প্রচেষ্টা করা উচিত। বিলম্বে বিচার মানে বিচারের নামে প্রহসন।’
২০১৯ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারকরা আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করার অনুরোধ মঞ্জুর করেন।
তদন্ত শুরু করার এই অনুমোদনকে ন্যায়বিচারের অনুসন্ধান ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হিসেবে দেখা হয়, বিশেষত এই পরিস্থিতিতে কথিত অপরাধের শিকারদের জন্য।
প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের তদন্তকারীরা এখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যা ঘটেছে তার সত্যতা উন্মোচনের জন্য সতর্কতা ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেষ্টা করছেন।
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। আমরা বলছি গণহত্যা আর কখনো হবে না।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি