রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক কর্মকাণ্ডের পঞ্চম বছরে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও অংশীদার সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় জনগণের কল্যাণে দৃঢ় ও টেকসই আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আবারও আহ্বান জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রোহিঙ্গা মানবিক সংকটের জন্য ২০২২ সালের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) প্রস্তাবিত হচ্ছে।
কক্সবাজার ও ভাসান চরে অবস্থিত প্রায় ৯ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশে-পাশে থাকা প্রায় পাঁচ লাখ ৪০ হাজার বাংলাদেশি মিলিয়ে মোট প্রায় ১৪ লাখ মানুষের সহায়তার জন্য এই জেআরপিতে প্রায় ৮৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল চাওয়া হয়।
বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে ২০২২ সালের জেআরপি অনুযায়ী কাজ করবে ১৩৬টি সংস্থা, যার মধ্যে ৭৪টি বাংলাদেশি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার কয়েক দশক ধরে উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। বর্তমানে যখন বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ইউএনএইচসিআর ও অংশীদার সংস্থাগুলো নিশ্চিত করতে চাচ্ছে যেন পৃথিবী রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকটকে ভুলে না যায়। সেজন্য শরণার্থীদের ও তাদের আশে-পাশে থাকা স্থানীয় জনগণের প্রয়োজন মেটাতে চলমান অর্থায়ন ও সহায়তা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক৷
ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করলে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। এ বছরের জেআরপি তাই পুনঃবনায়ন ও জ্বালানি সহায়তা সহ দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের জন্য বর্ধিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।
শরণার্থী প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইউএনএইচসিআর ও অংশীদার সংস্থাগুলো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের উপস্থিতি বজায় রাখছে। যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সাথে ফিরতে না পারছে, ততদিন তাদের জীবন রক্ষাকারী সুরক্ষা ও সহায়তা দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সহায়তা অতীতের মতই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেন নিরাপদ মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে, তা নিশ্চিত করা জরুরি। এর পাশাপাশি তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা উন্নয়নেরও প্রয়োজন আছে, যেন তারা ভবিষ্যতে টেকসই প্রত্যাবাসনের পর তা কাজে লাগাতে পারে।
এই প্রথমবার জেআরপিতে ভাসান চরের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ২৪ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সেখানে স্থানান্তর করেছে। স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, পুষ্টি, শিক্ষা, জীবিকা ও দক্ষতা তৈরিসহ চরে চলমান প্রয়োজনীয় মানবিক সেবাসমূহ বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জেআরপি উত্থাপনের এই অনলাইন অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করছে বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২