নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্র বাণিজ্য বন্ধে প্রয়োজনে গুলি ছোঁড়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সিলেটে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ও জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত স্বাস্থ্যবিষয়ক আলোচনা সভা শেষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অব্যাহত এসব সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি মাদ্রাসায় শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ভোরে গুলি করে ও কুপিয়ে সাতজনকে হত্যা করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে আহত অবস্থায় ক্যাম্প সংলগ্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি বড় সভা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে যাতে আইনশৃঙ্খলা আরও উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে একটা বড় সভা গত বৃহস্পতিবার করেছি। এরপর শুক্রবারের(২২ অক্টোবর) দুর্ঘটনা। এটা তো খুবই আতঙ্কের বিষয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুতুপালং-১ (ইস্ট) লম্বাশিয়া ক্যাম্পের ডি-৮ ব্লকে গুলি করে হত্যা করা হয় আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে। মুহিবুল্লাহ হত্যা এবং শুক্রবারের ঘটনার পেছনে দেশি-বিদেশি কোনো চক্রের যোগসাজশ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন লোকে বলছে যে, ওখানে ড্রাগের (মাদক) ব্যবসা হয়…আর কেউ কেউ তথ্য দিয়েছে, কিছু উইপেন, কিছু বন্দুক-টন্দুকও আনা হয়। আমরা এসব নিয়ে কালকে (গত বৃহস্পতিবার) আলোচনা করেছি। আমার প্রস্তাব হলো, এই ড্রাগ ও অস্ত্র পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনে গুলি ছুড়তে হবে। এগুলো আমরা কালকে আলোচনা করেছি। ড. মোমেন আরও বলেন, অনেক লোক (মিয়ানমারে) ফেরত যেতে চায় না। তাদের স্বার্থে আঘাত লাগে। তারা হয়তো এসব অঘটন ঘটাচ্ছে। আমি ঠিক জানি না, জানতে হবে। অতিসম্প্রতি ভারত তিস্তা ব্যারেজের গজলডোবা অংশের সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় আকস্মিক ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে দেশের উত্তরাঞ্চল। তিস্তার পানি এভাবে হুট করে বাংলাদেশে ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আজ শুক্রবার (২২ অক্টোবর) আমাদের স্বরাষ্ট্রসচিব ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আলাপ করবেন। একাধিক ইস্যু আছে, সেসব নিয়ে। পানির বিষয়টি আগে আমাদের ভারত জানিয়েছিল কি না, আমি জানি না। তবে এগুলোসহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলাপ হবে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, সরকারি সম্পর্ক খুবই দৃঢ়। কিন্তু বিভিন্ন গোষ্ঠী বা ব্যক্তি বিশেষের কারণে অনেক সময় ঝামেলা হয়। আমরা এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবো। এরআগে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) সকালে বিমানযোগে ঢাকা থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিমানবন্দরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদের সঙ্গে দেখা হলে মন্ত্রী তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে তিন মন্ত্রী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে ফটোসেশনে অংশ নেন। তার আগে সকাল ১০টার দিকে মন্ত্রী সিলেট নগরের বালুচরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে একটি সভায় যোগ দেন। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে রিজলভ টু সেইভ লাইভ কার্যক্রম বিষয়ক ওই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম