অনলাইন ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলার বৈধতা নিয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকার যে প্রশ্ন তুলেছে তা প্রত্যাখ্যান করতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গাম্বিয়ার আইনজীবীরা। গত বুধবার রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে নিজেদের যুক্তিতর্ক তুলে ধরে মামলা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তারা। রোহিঙ্গারা এখনো গণনৃশংসতার চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বলে উল্লেখ করে গাম্বিয়া। স্থানীয় সময় গত বুধবার নেদারল্যান্ডসের হেগে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে অংশ নেন মামলার বাদী গাম্বিয়ার আইনজীবীরা। শুরুতেই রোহিঙ্গা গণহত্যার ভয়াবহতা ও বিচারের তাৎপর্য তুলে ধরতে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের কিছু অংশ উপস্থাপন করা হয়। প্রথম দিনের শুনানিতে মিয়ানমার মামলার বৈধতা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছে তার বিপক্ষে গত বুধবার পাল্টা যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচার বিষয়কমন্ত্রী দাউদা জেলো। একই সঙ্গে মিয়ানমারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে মামলা চালিয়ে যেতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মামলার আরেক আইনজীবী পল এস রেইশলার রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, গত বছর মিয়ানমার সেনাবাহিনী সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেয় যা চলমান মামলাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। রোহিঙ্গারা এখনো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণনৃশংসতার চরম ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে রোহিঙ্গা গণহত্যার দায় থেকে কোনোভাবেই যেন মিয়ানমার সেনাবাহিনী ছাড় না পায় সেদিকে সতর্ক করেন তিনি। পল এস রেইশলার বলেন, তারা যদি আদালতের কাছ থেকে ছাড় পেয়ে যায় তাহলে তাদের দায়ী করার মতো কেউ থাকবে না। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নিপীড়নেরও কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত হত্যাকা- যে গণহত্যা তার সপক্ষে যুক্তি তর্ক তুলে ধরে মিয়ানমার সরকারকে দায়ী করতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানায় মামলার বাদী গাম্বিয়া। প্রথমদিনের শুনানিতে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির পরিবর্তে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পাঠানো আন্তর্জাতিকবিষয়ক মন্ত্রী কো কো হ্লাইং বলেন, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা ও আইসির হয়ে মামলা করে গাম্বিয়া যার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। এই দাবির বিপক্ষে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরে গাম্বিয়ার আইনজীবীরা সাফ জানান, তৃতীয় কোনো পক্ষ নয় গাম্বিয়া নিজেই এ মামলা দায়ের করেছে। ২০১৭ সালে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও যে নৃশংসতার জেরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। কক্সবাজারের আশ্রয় শিবির বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির এখন। রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার চেয়ে ২০১৯ সালে গাম্বিয়ার করা মামলায় মিয়ানমার প্রাথমিকভাবে যে আপত্তি জানিয়েছে তার রায় দিতে দিতে আরো কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। মিয়ানমারের আবেদন প্রত্যাখ্যান হলে মামলা চলমান থাকবে এবং চূড়ান্ত রায় পেতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু