জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া ১০ লাখ রোহিঙ্গার নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসক্যাপ) ৭৮তম অধিবেশনে সম্প্রচারিত একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ১১ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছে। এই মানবিক সঙ্কট নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মরাত্মক হুমকির সৃষ্টি করেছে।’
তিনি বলেন,‘আমরা এই বাস্তুচ্যুত মানুষের নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো আগ্রহ এবং সক্রিয় সমর্থন আশা করি।’
তিনি বলেন, বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন রাশিয়ান-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হিসাবে দেখা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো যুদ্ধের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় যৌথ পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।’
তিনি উল্লেখ করেন যে, মহামারীটি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে যেখানে দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মহামারী মোকাবিলা করার সময় বাংলাদেশে আমরা জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। আমাদের সময়োপযোগী এবং বিচক্ষণ পদক্ষেগুলো সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পরিচালনা করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ নেতিবাচক বা নামমাত্র জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও মহামারি চলাকালীন আমরা একটি প্রশংসনীয় প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছি।
তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ ২০২১-২২ সালে ৭ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি আশা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই প্রায় সব নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে টিকা দেয়ার আওতায় নিয়ে এসেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে স্নাতক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটি আমাদের পরিকল্পিত উন্নয়ন যাত্রা যা আমরা গত ১৩ বছর ধরে অনুসরণ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, জনগণই আমাদের উন্নয়ন সাধনার কেন্দ্রবিন্দু, এসডিজিতেও তাই।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার এসডিজিতে প্রদত্ত কাঠামোর পরিকল্পিত নথিতে সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশগত সুরক্ষা এবং আইসিটির একীভূতকরণের চ্যালেঞ্জ অন্তর্ভুক্ত করেছে।’
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম