নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদের পর থেকে চলমান বিধিনিষেধ আগামীকাল বুধবার থোকে শিথিল হতে যাচ্ছে। কিন্তু তার আগেই বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছেন না সাধারণ মানুষ। এখন রাস্তায় বাস বাদে চলছে প্রায় সব ধরনের গাড়ি। প্রধান সড়কে কিছু দোকান বন্ধ থাকলেও অলি-গলির অধিকাংশ দোকান খুলতে দেখা গেছে। সোমবার (৯ আগষ্ট) সকালে রামপুরা, হাতিরঝিল, তিব্বত, মহাখালী এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সব জায়গায় গাড়ির চাপ ও দোকানপাট খোলার চিত্র দেখে বলার উপায় নেই দেশে ‘কঠোর’ বিধিনিষেধ চলছে। রামপুরা এলাকার কলেজশিক্ষক সাজ্জাদুল বারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ‘কঠোর’ বিধিনিষেধে সাধারণ মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তাই বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার খবরের পর থেকে সবাই বাইরে বের হচ্ছেন।
যদিও এখনো বিধিনিষেধ চলমান রয়েছে। কিন্তু তারা মানছেন না। কয়েকজন কিশোরকে হাতিরঝিলে বসে থাকতে দেখে লকডাউনে কেন বের হয়েছ- জানতে চাইলে মনে হলো তারা প্রশ্ন শুনে দারুণ বিরক্ত। পরে একজন বলল, লকডাউন তো শেষ। আর কত বাড়িতে থাকা যায়! ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। দীর্ঘ দিন পরে সবাই একসঙ্গে হলাম। এদিন বেসরকারি প্রায় সব ধরনের অফিস খোলা থাকায় রিক্সা-ভ্যানে অফিসগামী যাত্রীদের ছোটাছুটির চিত্র চোখে পড়েছে। চলছে সিএনজি-মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন। হাতিরঝিলে যে পরিমাণ ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে, চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শুরুর দিকে এর এক-চতুর্থাংশও ছিল না। লকডাউন শুরুর পর দিন যত গেছে, গাড়ির চাপ তত বেড়েছে। সরেজমিনে এসব এলাকার চেকপোস্টগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। চেকপোস্টে কিছু পুলিশ সদস্য থাকলেও সব ধরনের গাড়ি কোনো ধরনের বিড়ম্বনা ছাড়াই পার হয়ে যেতে দেখা যায়। পুলিশ সদস্যরা শুধুমাত্র তাদের ডিউটি পালনে দাঁড়িয়ে ছিলেন চেকপোস্টে। এদিকে মেইন রোডের পাশাপাশি বাজার এলাকাগুলোতে মানুষের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বেশ। সকাল থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বেরিয়েছেন অনেকে। অনেকে আবার বেরিয়েছেন বিনা কারণে, আড্ডা-গল্প জমিয়েছেন রাস্তার পাশে আর বিভিন্ন মোড়ে। অন্যদিকে রাজধানীর যেখানে গণটিকাদান কার্যক্রম চলছে, তার আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রচুর মানুষের ভিড় দেখা যায়। মানুষ গণটিকার অজুহাতেও অযথা বাইরে বের হচ্ছেন বলেও জানান রামপুরায় দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য। ১ আগস্ট চলমান লকডাউনের মধ্যে গার্মেন্টসহ সব রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে মানুষের চাপ বেড়েছে। এরপর থেকেই কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে লকডাউন ব্যবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে গত রোববার ঘোষণা এসেছে দীর্ঘদিন ধরে ‘কঠোর’ বিধিনিষেধের পর আগামী বুধবার থেকে শর্তসাপেক্ষে অফিস ও গণপরিবহনসহ সবকিছু খুলে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল রাখা ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম