November 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 8th, 2021, 7:27 pm

লকডাউন শেষে ১১ অগাস্ট খুলছে প্রায় সবই

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের বিধিনিষেধ ১১ অগাস্ট থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তুলে নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রোববার (৮ আগষ্ট) এ বিষয়ে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তাতে ১১ অগাস্ট থেকে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস, যানবাহন, বিপণি বিতান ও দোকানপাট ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে’ চালু করা অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর শিল্প কারখানা গত ১ অগাস্ট থেকেই খোলা রয়েছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার বা বিনোদনকেন্দ্র খোলার বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। গণপরিবহনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক এলাকার প্রতিদিন মোট যানবাহনের অর্ধেক গাড়ি রাস্তায় নামানোর শর্ত দেওয়া দেওয়া হয়েছে। হোটেল-রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখতে হবে। করোনাভাইরাস মহামারীর দেড় বছরে এখনই সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা পার করছে বাংলাদেশে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১ জুলাই দেশে লকডাউন জারি করা হলেও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে কোরবানির ঈদের সময় নয় দিন তা শিথিল করা হয়েছিল। ঈদের ছুটির পর ২৩ জুলাই থেকে আবার লকডাউন শুরু হলেও এর মধ্যে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। এরপর ১ অগাস্ট সব রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খোলার অনুমতি মেলে। চলমান এই লকডাউন আগামী ১০ অগাস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর কথা গত ৩ অগাস্টের বৈঠক শেষে জানিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সেদিনই তিনি বলেছিলেন, এক সপ্তাহ ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনার পর ১১ অগাস্ট থেকে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিস খুলবে। সীমিত পরিসরে ‘রোটেশন করে’ যানবাহন চলবে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া ছয় দিনের এই টিকাদান কর্মসূচিতে সারা দেশে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ৩২ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তবে মানুষের ব্যাপক সাড়া মেলায় তা ৩৫ লাখ ছাড়াবে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। কাজের প্রয়োজনে যারা বাড়ির বাইরে আসছে, তাদের টিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রোববার (৮ আগষ্ট) দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “যেহেতু দোকানপাট খুলতে হবে- সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানে সেদিকে আমাদের জোর থাকবে। গত শনিবার (৭ আগষ্ট) থেকে গণটিকা চালু করেছি, এটি ১২ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে। “আমরা চাইব সবাই যেন মাস্ক পরে। আমরা টিকা কার্যক্রমের মধ্যে যারা দোকানদার, যাদের বাইরে যেতে হয়, ইমাম-মুয়াজ্জিন, ড্রাইভার-হেল্পারদের প্রায়োরিটি দিয়েছি। যাদের বাইরে আসতে হয়, মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়, তাদের প্রায়োরিটি দিচ্ছি। ধাপে ধাপে আস্তে আস্তে সীমিত পরিসরে শিথিল করার চিন্তা আছে।” যারা মাস্ক পরবে না, তাদের জরিমানা করার ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়ার পরিকল্পনার অগ্রগতি জানতে চাইলে ফরহাদ বলেন, এ বিষয়ে গত সভায় আলোচনা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে আগামীতে নির্দেশনা পাব, তার আলোকে মাস্ক পরা নিয়ে মানুষকে সচেতন করে, পাড়া, মহল্লা ও ওয়ার্ডে করোনা সচেতন কমিটি করব। মানুষকে বোঝানো, যেন মাস্ক পরেন, কারণ ছাড়া বাইরে না যান এবং জনসমাগম ঘটে এমন জায়গা এড়িয়ে চলেন। অধ্যাদেশ সংশোধন কি পর্যায়ে আছে এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারছি না।
যা খুলছে, যেভাবে খুলছে
১. সব সরকারি/আধা-সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে।
২. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
৩. সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন/যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
৪. শপিংমল, মার্কেট, দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখা যাবে।
৫. সকল প্রকার শিল্প-কলকারখানা চালু থাকবে।
৬. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
৭. সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৮. গণপরিবহন, বিভিন্ন দপ্তর, মার্কেট ও বাজারসহ যে কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা দেখা গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।